আড়াইহাজারে ইজতেমা ও তাবলীগ জামাতের একাংশের নেতা দিল্লির মাওলানা মোহাম্মদ সাদ কান্ধলভি ইস্যুতে মুখোমুখি অবস্থান সৃষ্টি হয়েছে নারায়ণগঞ্জের আলেম উলামাদের মধ্যে। একটি পক্ষ কোনোভাবেই আড়াইহাজারে ইজতেমা করতে দিবেন না এবং মাওলানা মোহাম্মদ সাদ কান্ধলভিকে নারায়ণগঞ্জে আসতে দিবেন না।
আরেকটি পক্ষ যে কোনোভাবেই হোক আড়াইহাজারে ইজতেমা করবেন এবং মোহাম্মদ সাদ কান্ধলভিকে আনবেন। এতে কেউ বাধা দিতে চাইলে তাদেরকে প্রতিহত করা হবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন। বিপরীতে অপরপক্ষটিও যারা আড়াইহাজারে ইজতেমা করবেন এবং সাদ নারায়ণগঞ্জে আসতে প্রতিহত করা হবে বলে জানান দিয়েছেন।
এনিয়ে তাবলীগের মধ্যে দুই পক্ষের মুখোমুখি অবস্থান সৃষ্টি হয়েছে। সেই সাথে কেউ কাউকেই ছাড় দিতে রাজী নয়। সবশেষ শনিবার ৯ নভেম্বর নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে তাবলীগের দুইপক্ষ এবং জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সাথে আলোচনা হয়েছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কোনো সমাধান হয়নি।
জানা যায়, শনিবার নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে আসেন আড়াইহাজারের তাবলীগের অনুসারীরা। সেই সাথে তাদের বিপুল পরিমাণ উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়। বিভিন্ন এলাকা বাস ভরে আসেন মোহাম্মদ সাদ কান্ধলভির অনুসারী তাবলিগের লোকজন।
তাদের একজনের সাথে কথা বলে জানা যায়, তারা যে কোনোভাবেই আড়াইহাজারে ইজতেমা করবেন। সেই সাথে যদি সমস্যার সমাধান করতে হয় তাহলে মোহাম্মদ সাদ কান্ধলভিকে দেশে আসতে দিতে হবে। তার সাথে আলোচনা করতে হবে। আলোচনা করার পর সাদের মন্তব্যের প্রমাণ পাওয়া যায় এবং বিভ্রান্তি প্রমাণিত হয় এবং সাদ যদি তার অবস্থান থেকে সড়ে না আসেন তাহলে তারা সাদের সাথে থাকবেন না।
কিন্তু সাদকে বাংলাদেশে আসতে বাধা দেয়া যাবে না। আড়াইহাজারে ইজতেমা করতে দিতে হবে। সেই সাথে তার বিরুদ্ধে যে সকল অভিযোগ দেয়া হচ্ছে সে সকল অভিযোগের প্রমাণ দিতে হবে। অন্যথায় তারা তাদের দাবি থেকে সড়ে আসবেন না।
অন্যদিকে তাবলীগ জামায়াতের সাদপন্থীদের সতর্ক করেছেন হেফাজতে ইসলামের নায়েবে আমীর ও ডিআইটি জামে মসজিদের খতিব আব্দুল আউয়াল। সেই সাথে ধর্মপ্রাণ মুসল্লি ও তৌহিদী জনতাকেও এ ব্যাপারে সতর্ক থাকার কথা বলেছেন। নারায়ণগঞ্জে কোনোভাবেই সাদপন্থীদের জায়গা দেয়া হবে না তিনি জানিয়েছিলেন।
গত ৭ নভেম্বর সন্ধ্যায় নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মাহমুদুল হকের সাথে আব্দুল আউয়াল এবং আব্দুল কাদির সহ অন্যান্য আলেম উলামাদের সভা অনুষ্ঠিত হয়। এই সভায় সাদপন্থীরা নারায়ণগঞ্জে যেন কোনোভাবেই সমাবেশ করতে না পারে সে বিষয়ে জেলা প্রশাসকের কাছে প্রস্তাবনা পেশ করেছেন।
আব্দুল আউয়াল বলেছিলেন, গত ৫ নভেম্বর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে দেশবরেণ্য উলামায়ে কেরামের সিদ্ধান্তে বাংলাদেশের সাদপন্থীরা কোনো কার্যক্রম করতে পারবে না। সে পরিপ্রেক্ষিতে আমরা শুনতে পারছি নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে সাদপন্থীরা ইজতেমা করতে যাচ্ছে। আমরা তাদেরকে সাবাধান করে দিচ্ছি তারা যদি সংশোধন না হয়ে কোনো ইজতেমা ব্যবস্থা করতে চায় তৌহিদ জনতা আলেম উলামা প্রতিহত করবো।
তিনি আরও বলেছিলেন, আমরা নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কাছে প্রস্তাবনা পেশ করেছি। তার সাথে পরামর্শ করে সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে কোনো মূল্যে প্রতিহত করবো। তৌহিদি জনতা আপনারা সজাগ থাকুন। কোনোভাবে যেন আড়াইহজারে যেন এ ধরনের কার্যক্রম করতে না পারে।
এর আগেও গত কয়েক জুমআর খুতবায় মাওলানা আব্দুল আউয়াল সাদপন্থীদের সতর্ক করে আসছেন। সবশেষ গত ৮ নভেম্বর মসজিদের খুতবায় আব্দুল আউয়াল বলেন, মুসলমান ভাইয়েরা গোমরাহ হয়ে যাবে আর এদেশের আলেম উলামা বসে থাকবেন এটা হতে পারে না। উনারা তওবা হয়ে ফিরে আসুক। তা না করে উল্টা চ্যালেঞ্জ দিবেন মানুষকে ডাকবেন এটা মেনে নেয়া যায় না।
আপনার মতামত লিখুন :