স্টাফ রিপোর্টার : নারায়ণগঞ্জের ‘হাজী’ হিসেবে পরিচিত আজমেরি ওসমান। সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজদের সাম্ম্রাজ্য নিয়ে আজমেরি ওসমানের পথযাত্রা। জাতীয় পার্টির চারের এমপি প্রয়াত নাসিম ওসমানের একমাত্র ছেলে। ওসমান পরিবারের তৃতীয় প্রজন্ম হিসেবে আজমেরি ওসমানের বির্তক কমতি নেই। জাতীয় পার্টির রাজনৈতিক আদর্শে বিশ্বাসী হয়ে দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য হন নাসিম ওসমান। তার বাবা একেএম শামসুজ্জোহা চিলেন প্রখ্যাত আওয়ামী লীগ নেতা এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অন্যতম সহচর। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট শেখ মুজিবুর রহমানকে পরিবারের সকলের সাথে হত্যা করা হয়। তার আগের দিন ১৪ আগস্ট তিনি পারভীন ওসমানকে বিয়ে করেন। বিয়েতে শেখ মুজিবুর রহমানের পুত্র শেখ কামাল উপস্থিত ছিলেন। ১৫ আগস্ট স্বপরিবারে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হলে নাসিম ওসমান নবপত্নীকে ফেলে হত্যার প্রতিশোধ নিতে চলে যান। তিনি ঢাকায় প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। তিনি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীর বাহিনীতে যোগ দেন। এরপর তিনি আবার ভারতে চলে যান এবং সেখানে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ করার চেষ্টা করেন। তৎকালীন কাদের বাহিনীর সেকেন্ড ইন কমান্ড হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি।
প্রয়াত নাসিম ওসমান ২০১৪ সালের ৩০ এপ্রিল মৃত্যুর পর জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য হন তার স্ত্রী পারভীন ওসমান। ওই সময়ে ছেলে আজমেরি ওসমানকে নিয়ে দল গঠন মাঠে নেমেছিলেন। জেলা ও মহানগর জাতীয় পার্টি নেতাদের নিয়ে পারভীন ও আজমেরি ওসমানের রাজনীতি সক্রিয় দেখা যেত প্রায় সময়ে। এমনকি ২০১৪ ও ২০১৮ সালেও জাতীয় পার্টির মনোয়ন যুদ্ধে দেবর সেলিম ওসমানের বিরুদ্ধে অবস্থানে ছিলেন পারভীন ও আজমেরি ওসমান। এবার তার ছেলে আজমেরি ওসমান জাতীয় পাটি ছেলে আওয়ামী লীগের যোগ দিয়েছেন! বাবা দল ত্যাগ করে তিনি শেখ মুজিবুর রহমান, শেখ হাসিনা ও সজীব ওয়াজেদ ছবি’র সম্বলিত পোষ্টারে আজমেরি ওসমানের ছবি নিয়ে আলোচনা সমালোচনা শুরু হয়েছি।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে হরতাল অবরোধ চলাকালে আওয়ামী লীগের স্লোগান নিয়ে আজমেরি ওসমান নারায়ণগঞ্জের দুইটি আসন চুষে বেড়িয়েছেন। তখন তিনি আওয়ামী লীগ যাবার কোন পথ দেখা যায়নি। জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আজমেরি ওসমান বাড়ি গাড়ি সহ বিভিন্ন জিনিসপত্র জ্বালিয়ে দেয় ছাত্র-জনতা। ওই সময় তিনি বোন জামাতা হাত ধরে দেশ ত্যাগ করেছে বলে শুনা যায়। সাড়ে পাচঁ মাস পর এবার নারায়ণগঞ্জের সরকারি তোলারাম কলেজের সামনে সাঁটানো হলো আজমেরী ওসমানের পোস্টার। এক ভিডিওতে দেখা যায়, একটি সিএনজি চেপে তিনজন তরুণ বয়সী ছেলে সরকারি তোলারাম কলেজের মূল গেটে পোস্টার সাঁটিয়ে তার ছবি তোলেন এবং পরে সিএনজিতে চড়েই স্থান ত্যাগ করেন।
আজমেরী ওসমান আলোচিত তানভীর মুহাম্মদ ত্বকী হত্যার অন্যতম আসামি। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আজমেরী ওসমান ও তার অনুসারীদের প্রকাশ্যে গুলি চালাতেও দেখা গেছে। এর আগে গত ২৩ জানুয়ারি মধ্যরাতে নারায়ণগঞ্জ শহরের গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি স্থান ও সরকারি দপ্তরের দেয়ালে নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের পোস্টার সাঁটানো হয়েছে। পোস্টারে গণঅভ্যুত্থানের মুখে পতন হওয়া আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, ‘গডফাদার’ খ্যাত সাবেক সংসদ সদস্য শামীম ওসমান ও তার ছেলে ইমতিনান ওসমান অয়নের ছবি দেখা যায়।
নিষিদ্ধ এই ছাত্র সংগঠনের এই পোস্টারিং-এর বিরুদ্ধে ক্ষুব্দ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা। বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের নেতারা একত্রে শহরে বিক্ষোভ মিছিলও করেছেন। তারা পোস্টারিং করা ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনারও দাবি জানিয়েছেন। যদিও, এখন পর্যন্ত পুলিশ বা প্রশাসন পোস্টারিং করা ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনতে পারেনি।
আপনার মতামত লিখুন :