News Narayanganj
Bongosoft Ltd.
ঢাকা বৃহস্পতিবার, ৩০ জানুয়ারি, ২০২৫, ১৭ মাঘ ১৪৩১

শ্রমিক লীগ নেতার পক্ষে বিএনপি


দ্যা নিউজ নারায়ণগঞ্জ ডটকম | স্টাফ রিপোর্টার প্রকাশিত: জানুয়ারি ২৯, ২০২৫, ১০:৩৫ পিএম শ্রমিক লীগ নেতার পক্ষে বিএনপি

নারায়ণগঞ্জ আদালতপাড়ায় প্রতিদিনই কোনো না কোনো বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের হত্যা মামলায় গ্রেফতার আওয়ামী লীগ কিংবা অঙ্গ সহযোগি সংগঠনের নেতাকর্মীদের পক্ষে আইনি লড়াইয়ে অবতীর্ণ হচ্ছেন বিএনপির আইনজীবীরা। তারই ধারাবাহিকতায় এবার নারায়ণগঞ্জ মহানগর শ্রমিক লীগের দুই নেতার পক্ষে আইনি লড়াইয়ের অবতীর্ণ হয়েছেন মহানগর বিএনপির আহবায়ক ও আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান। 

মহানগর বিএনপির একজন শীর্ষ পর্যাযের নেতা হওয়া সত্বেও অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলা করা ও গুলি চালানোর মামলায় আসামীদের পক্ষ নিয়েছেন। শুধু পক্ষ নেয়ার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকেনি তার পক্ষে রায় নেয়ার জন্য প্রতিপক্ষ আইনজীবীর সাথে রীতিমত বাকযুদ্ধেও জড়িয়েছেন যা নিয়ে বিএনপির দলীয় আইনজীবীদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ বিরাজ করছে।

আদালত সূত্রে জানা যায়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় মো. রাসেল নামে তৈরি পোশাক শ্রমিক হত্যা মামলায় নারায়ণগঞ্জ মহানগর শ্রমিক লীগের দুই নেতাকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতার নেতারা হলেন- শ্রমিক লীগের নারায়ণগঞ্জ মহানগর কমিটির সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আলমগীর কবির বকুল ও সাবেক যুগ্ম সম্পাদক আসলাম মিয়া।

মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) দুপুরে ৭ দিনের রিমাণ্ড চেয়ে এই দুই শ্রমিক নেতাকে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. হায়দার আলীর আদালতে উঠানো হয়। আর আদালতে আসামীপক্ষের আইনজীবী হিসেবে আওয়ামী লীগপন্থী আইনজীবীদের পাশাপাশি মহানগর বিএনপির আহবায়ক ও আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খানও ছিলেন। সেই সাথে সিনিয়রের দিক দিয়ে তিনি অন্য সকল আইনজীবীদের চেয়ে এগিয়ে ছিলেন।

বিপরীতে রাষ্ট্রপক্ষে পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট আবুল কালাম আজাদ জাকির ও আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট আব্দুল বারী ভূইয়া সহ অন্যান্য আইনজীবীরা ছিলেন।

আইনজীবীদের সূত্রে জানা যায়, শুনানী চলাকালে অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান তাদের বিএনপি নেতা হিসেবে সাব্যস্ত করতে চান। আদালতে তিনি উপস্থাপন করেন আসামীদের একজনের বাবা বিএনপির রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন। সেই সাথে তিনি তার পক্ষে অনড় থাকেন।

বিপরীতে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা বলেন, বাবা বিএনপি করলে ছেলেরা তো আর বিএনপির রাজনীতি করেন না। তারা পদধারী নেতা ছিলেন। এই নিয়ে দুইপক্ষের আইনজীবীর মাঝে পাল্টাপাল্টি যুক্তি তুলে ধরা হয়। সবশেষ আদালত উভয় পক্ষের শুনানী শেষে তিন দিনের রিমাণ্ড মঞ্জুর করেন।

এদিকে শুনানী শেষে আদালতে বাইরে অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খানের আওয়ামী লীগের পদধারী আসামীদের পক্ষ নেয়ায় আইনজীবীদের মাঝে তর্ক বিতর্কের সৃষ্টি হয়। বিএনপি পন্থী অনেক আইনজীবী এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। কেউ কেউ বলেন, অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান একজন সিনিয়র নেতা হয়ে কিভাবে আওয়ামী লীগের পক্ষ নিয়ে থাকেন। তিনি এটা কখনই করতে পারেন না।

আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট আবুল কালাম আজাদ জাকির বলেন, গার্মেন্টস শ্রমিক হত্যা মামলায় ৭ দিনের রিমান্ড চেয়ে শ্রমিক লীগের দুই নেতাকে আদালতে উঠানো হয়েছিলো। আদালত শুনানী শেষে ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন। রাষ্ট্রপক্ষে আমি সহ অ্যাডভোকেট আব্দুল বারী ভূইয়া ছিলেন। আসামীদের পক্ষে অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান সহ আওয়ামী লীগের আইনজীবীরা ছিলেন।

এর আগে গত সোমবার শহরের খানুপর এলাকা থেকে শ্রমিক লীগের নারায়ণগঞ্জ মহানগর কমিটির সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আলমগীর কবির বকুল এবং সাবেক যুগ্ম সম্পাদক আসলাম মিয়াকে পিবিআইন গ্রেফতার করেন।

মামলার বরাতে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন-পিবিআই জানায়, গত বছরের ১৯ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালীন ডিআইটি এলাকায় গুলিবিদ্ধ হন পোশাক শ্রমিক মো. রাসেল। তিনি স্থানীয় একটি হোসিয়ারি কারখানায় কাজ করতেন। সেই সাথে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২২ জুলাই মারা যান রাসেল।

পিবিআই কর্মকর্তা মোস্তফা কামাল রাশেদ বলেন, গ্রেফতার ব্যক্তিরা এজাহারভুক্ত আসামি নন। তবে সদর মডেল থানার হত্যা মামলাটির তদন্তে পিবিআই তাদের দুজনের সম্পৃক্ততা পেয়েছে।

Islam's Group