News Narayanganj
Bongosoft Ltd.
ঢাকা রবিবার, ০২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, ২০ মাঘ ১৪৩১

আওয়ামী লীগ নেতার পক্ষে সাখাওয়াতের একক লড়াই


দ্যা নিউজ নারায়ণগঞ্জ ডটকম | স্টাফ রিপোর্টার প্রকাশিত: জানুয়ারি ১৯, ২০২৫, ১০:১৭ পিএম আওয়ামী লীগ নেতার পক্ষে সাখাওয়াতের একক লড়াই

রূপগঞ্জের এক আওয়ামী লীগ নেতার পক্ষে জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি ও মহানগর বিএনপির আহবায়ক অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান একাই একক লড়াইয়ের অবতীর্ণ হয়েছেন। আদালতের প্রতি শুনানীতেই তিনি একাই শুনানী করে আসছেন। আর তার বিপরীতে বিএনপির শীর্ষ পর্যায়ের প্রায় সকল আইনজীবী শুনানী করে থাকেন।

যার সূত্র ধরে প্রায় শুনানীতেই সাখাওয়াত হোসেন খানকে বিপর্যস্ত হতে হচ্ছে নিজ দলীয় আইনজীবীদের কাছেই। সেই সাথে প্রতি শুনানীতেই তাকে আইনি লড়াইয়ে পিছু হটতে হচ্ছে। তিনি যেন বিএনপির অন্য সকল আইনজীবীদের সাথে পেরে উঠছেন না।

আদালতসূত্রে জানা যায়, সাম্প্রতিক সময়ে রূপগঞ্জ থানার দায়ের করা একটি মামলায় গ্রেফতার হন আলিমুদ্দিন। যেই মামলার বাদী হচ্ছেন বাদী ছিলেন মো. আবুল হোসেন যিনি বিএনপির রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত এবং তার পরিবারের সদস্যরাও বিএনপির রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত।

আর এই আলিমুদ্দিন কাঞ্চন পৌর আওয়ামী লীগের সহ সহ সভাপতি রয়েছেন। সেই সাথে তার ছেলে পনির হোসেন ও শহিদুল মিয়া যথাক্রমে কাঞ্চন পৌরসভা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও কাঞ্চন পৌরসভা ছাত্রলীগের ১নং ওয়ার্ড সভাপতি পদে রয়েছেন। তাদের বিরুদ্ধে রুপগঞ্জ থানায় বিভিন্ন মামলা রয়েছে। একই সাথে তারা নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা থানা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে হত্যা চেষ্টা মামলার মামলার এজাহারভুক্ত আসামী হিসেবে রয়েছেন।

আলিমুদ্দিন প্রথমে একটি মামলায় গ্রেফতার হলেও পরবর্তীতে অন্য মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়। তারই অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) নারায়ণগঞ্জ সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মো. আবু শামীম আজাদের আদালতে একটি চাঁদাবাজি মামলায় জামিন শুনানী হয়। যেখানে আলিমুদ্দিনের পক্ষে শুনানীতে ছিলেন অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান।

বিপরীতে আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট সরকার হুমায়ুন কবির, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আনোয়ার প্রধান, অ্যাডভোকেট আজিজুর রহমান মোল্লা ও অ্যাডভোকেট ওমর ফারুক নয়ন সহ প্রায় ২০ থেকে ২৫ জন বিএনপিপন্থী আইনজীবী শুনানীতে অংশ নেন। উভয় পক্ষের শুনানী শেষে আদালত জামিন নামঞ্জুর করেন। যা সাখাওয়াত হোসেন খানের জন্য আইনি পরাজয়।

এর আগে গত ৯ জানুয়ারি সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. হায়দার আলীর আদালতে একটি চাঁদাবাজি মামলা আরেকটি মারামারি ও বিস্কোরক মামলায় শুনানী হয়। এর মধ্যে চাঁদাবাজি মামলায় জামিন নামঞ্জুর এবং মারামারি ও বিস্কোরক মামলায় দুই দিনের রিমাণ্ড মঞ্জুর করা হয়।

এই দুই মামলার শুনানীতেও আসামী পক্ষে একমাত্র অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান ছিলেন। বিপরীতে বিএনপির শীর্ষ পর্যায়ের প্রায় সকল আইনজীবী ছিলেন। সেদিনের শুনানীকে কেন্দ্র করে সাখাওয়াত হোসেন সাথে বিএনপিপন্থী আইনজীবীদের আদালতে তর্ক বিতর্কও হয়েছে। আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট সরকার হুমায়ুন কবিরের একটি মন্তব্যে বিব্রতকর পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয়েছিলো সাখাওয়াত হোসেন খানকে।

এর আগে আলিমুদ্দিনকে আদালতে আনার পর থেকেই তার পক্ষে অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন একাই শক্ত অবস্থান নেন। তিনি তার পক্ষে জয় নেয়ার জন্য সবসময় আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যান। এ নিয়ে আইনজীবীদের সাথে অনেক সময় উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়ের ঘটনাও ঘটেছে।

এ বিষয়ে বিএনপি নেতা মোশারফ হোসেন বলেছিলেন, আওয়ামী লীগ আর যাই করুক একজন লোক আইনজীবীদের কাছ থেকে আইনি সহায়তা পেতেই পারে। কিন্তু একজন জুলুমবাজ, হত্যা মামলার আসামী, মাদক ব্যবসায়ী, মাটি খেকো মানুষের পক্ষ তো নেয়া যায় না। এমন কোনো অপকর্ম নেই যা এই আলিমুদ্দিন ও তার ছেলে পনির করেনি। আর তাদের পক্ষ হয়ে আইনি লড়াই চালাচ্ছে সাখাওয়াত হোসেন খান। তিনি আমাদের দলের লোক। তিনি আমাদের পক্ষ না নিয়ে আওয়ামী লীগের পক্ষ নিয়েছে যিনি কিনা একজন কুখ্যাত লোখ। আমি আরও বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীদের সাথে কথা বলেছি সবাই সাখাওয়াত হোসেন খানকে নিয়ে ক্ষুদ্ধ। তিনি এখন বিএনপির নেতাকর্মীদের সহযোগিতা করছেন না। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়া আওয়ামী লীগের পক্ষ আইনি লড়াই করছেন। যা তার দ্বারা আশা করা যায় না।

তবে এ বিষয়ে অ্যডাভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান বলেছিলেন, মামলার বাদী এবং আসামী একসাথে ইটাখোলা চালাতো। আসামী যদি আওয়ামী লীগ হয়ে থাকে তাহলে একসাথে ব্যবসা করলো কিভাবে? এখন আমরা মামলা পরিচালনা করলে বলে পক্ষ নেই। তারা একসাথে পার্টনার হয়ে খোলা চালিয়েছে এখন পার্টনারের সাথে অন্য বিষয় নিয়ে বিরোধ হয়েছে এখন চাঁদাবাজি মামলা দায়ের করে গ্রেফতার করিয়ে নিয়ে আসছে। তিনি কোনো আওয়ামী লীগ নেতা না। বললেই তো আর নেতা হয়ে যায় না। কোনো কমিটি পদে আছে কিনা দেখাক। তারা যে পদের কথা বলছে এগুলো ভুয়া কথা।

Islam's Group