News Narayanganj
Bongosoft Ltd.
ঢাকা বুধবার, ২২ জানুয়ারি, ২০২৫, ৯ মাঘ ১৪৩১

সহসাই জোসেফের কপাল খুলছে না


দ্যা নিউজ নারায়ণগঞ্জ ডটকম | স্টাফ রিপোর্টার প্রকাশিত: জানুয়ারি ১৮, ২০২৫, ১০:২৫ পিএম সহসাই জোসেফের কপাল খুলছে না

নারায়ণগঞ্জ বিএনপির রাজনীতিতে যেন সহসাই কপাল খুলছে না এক সময়ের তুখোড় ছাত্রনেতা কে এম মাজহারুল ইসলাম জোসেফের। দীর্ঘ সময় ধরে কর্মীবাহিনীদের ধরে রেখে বিএনপি দলীয় কর্মসূচিতে নিজের অবস্থান জানান দিয়ে আসলেও সবসময় তিনি বঞ্চিতই থেকে যাচ্ছেন। একের পর এক কমিটিতে তাকে বারবার আশাহত হতে হচ্ছে। বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা যেন তার দিকে মুখ তুলে তাকাচ্ছেনই না।

এরই মধ্যে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী যুবদল নারায়ণগঞ্জ মহানগর শাখার ৫১ সদস্য বিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ কমিটি দীর্ঘ দেড় বছর পর অনুমোদন করা হয়েছে। সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সভাপতি আব্দুল মোনায়েম মুন্না ও সাধারণ সম্পাদক নূরুল ইসলাম নয়ন এ কমিটি অনুমোদন করেন। গত ১৪ জানুয়ারি সন্ধ্যায় কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক নূরুল ইসলাম সোহেল স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

মনিরুল আলম সজলকে আহবায়ক সাগর প্রধানকে সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক এবং সাহেদ আহমেদকে সদস্য সচিব ঠিক রেখে ৫১ সদস্য বিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে যুগ্ম আহবায়ক রাখা হয়েছে ১১জনকে এবং সদস্য করা হয়েছে ৩৬ জনকে।

এর আগে ২০২৩ সালের ২৯ আগস্ট মনিরুল ইসলাম সজলকে আহবায়ক, সাগর প্রধানকে সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক ও  সাহেদ আহমেদকে সদস্য সচিব করে ৩ সদস্যের আংশিক কমিটি ঘোষণা করেন তাৎকালীন কেন্দ্রীয় যুবদলের সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মোনায়েম মুন্না ।

নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের আহবায়ক কমিটি পূর্ণাঙ্গ করার মধ্য দিয়ে নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের চলমান কমিটিকে আরও বেশি পোক্ত করা হয়েছে। কমিটি পূর্ণাঙ্গ করার মধ্য দিযে কে এম মাজহারুল ইসলাম জোসেফের অনুসারীদেরকে আশাহত করেছে। জোসেফের অনুসারীরা আশায় ছিলেন মহানগর যুবদলের নতুন কমিটি আসবে। আর এই কমিটির শীর্ষ পদে জায়গা করে নিবেন মাজহারুল ইসলাম জোসেফ।

সেই সাথে তার অনুসারীদেরও একটি ঠিকানা হবে। যার মাধ্যমে জোসেফ সহ তার অনুসারীদের দীর্ঘদিনের আশা আকাক্সক্ষার প্রতিফলন ঘটবে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কিছুই হলো না। বরাবরের মতো এবারও পদ-পদবী থেকে বঞ্চিতই থেকে যাচ্ছেন জোসেফ সহ তার অনুসারীরা। সেই সাথে আগামীতেও জোসেফের ব্যাপারে কোনো নিশ্চয়তা পরিলক্ষিত হচ্ছে না।

অথচ নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপি সহ অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের কোনো পদ পদবী না থাকলেও সবসময় সক্রিয় থাকেন এক সময়ের তুখোর ছাত্রনেতা মাজহারুল ইসলাম জোসেফ। এমন কোনো কর্মসূচি নেই যেখানে জোসেফ সহ তার অনুসারীদের কোনো অংশগ্রহণ থাকে না। দলীয় কর্মসূচি সহ সামাজিক কার্যক্রমেও তার সরব ভূমিকা থাকে। এবারের মহান বিজয় দিবসের কর্মসুচিতেও তিনি সক্রিয় ভূমিকায় ছিলেন।

সবশেষ গত ২০ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে ক্রীড়া প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। দক্ষিণ র‍্যালী বাগান ভূমি রক্ষা ও সমাজ উন্নয়ন পঞ্চায়েত কমিটির সভাপতি মো. গাজী সালাউদ্দিনের সভাপতিত্বে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। আর এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মাজহারুল ইসলাম জোসেফ।

সেই সাথে তার এই উপস্থিতিতে কেন্দ্র করে অনুষ্ঠানটি আরও বেশি জাকজমকপূর্ণ হয়ে উঠে। উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে টুর্নামেন্টের পুরস্কার বিতরণ করা হয়।

এসময় জোসেফ বলেন, আমরা তারেক রহমান রহমানের রাষ্ট্র কাঠামো উন্নয়নের ৩১ দফা বাস্তবায়নের জন্য কাজ করছি। বিগত ১৭ বছর একটি দানবীয় সরকার এদেশের নিরিহ মানুষের উপর স্টিম রোলার চালিয়েছে। তাদের এই দানবীয় রাজত্ব টিকিয়ে রাখতে এদেশের অলিতে গলিতে জন্ম নিয়েছে হাজারো ছোটছোট দানব।

তিনি আরও বলেন, বর্তমানে এই ফ্যাসিষ্ট সরকারের পতন হয়েছে, তার সাথে প্রশাসনের মাঝেও এক ধরনের ভয় কাজ করছে, তারেক রহমানের নির্দেশে আমরা এইসব সমস্যা মোকাবেলায় কঠোর হস্তে কাজ করে যাচ্ছি। আজকে যারা নিজের জীবনের বিনিময়ে এই ভয়মুক্ত দেশ আমাদের উপহার দিয়েছে, তাদের রক্তের সাথে আমরা কখনোই বেইমানি করব না।

এর আগে গত ১৬ ডিসেম্বর কে এম মাজহারুল ইসলাম জোসেফের নেতৃত্বে মহান বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে বর্ণাঢ্য র‌্যালীর আয়োজন করা হয়। মহানগর যুবদলের ব্যানারে আয়োজিত র‍্যালীটি শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে মহানগর বিএনপি আয়োজিত বিজয় র‍্যালীর সাথে যোগ দেয়। তাদের এই র‌্যালীতে নেতাকর্মীদের বেশ সাড়া মিলেছিলো।

এ সময় বক্তব্য রাখতে গিয়ে জোসেফ বলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ঘোষিত রাষ্ট্র কাঠামোর ৩১ দফার কর্মসূচি বাস্তবায়নে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। পরিশেষে তিনি বিভিন্ন ওয়ার্ড, থানা ও ইউনিয়ন থেকে আসা যুবদলের নেতাকর্মীদের ধন্যবাদ জানিয়ে কর্মসূচি সমাপ্ত করেন।

তার আগে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৪৩ তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষেও কে এম মাজহারুল ইসলাম জোসেফের উদ্যোগে কয়েকদিন ব্যাপী কর্মসূচি পালিত হয়েছে নারায়ণগঞ্জ মহানগরজুড়ে। তৃণমূল পর্যায়র নেতাকর্মীদের জাগিয়ে তুলেন তিনি। তার নেতৃত্বে যুবদলের নেতাকর্মীরা সরব হয়ে উঠে। আর এভাবে একের পর এক কর্মসূচি দিয়ে নিজের অবস্থান জানান দিয়ে আসছেন জোসেফ। 

দলীয় সূত্র বলছে, দলীয় পদ পদবীর বাইরে থেকেও মাজহারুল ইসলাম জোসেফ তার দাপুটে অবস্থান ধরে রেখেছেন। পদে না থেকেও তিনি নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের একটি অংশের নেতাকর্মীদের সংঘবদ্ধ করে দলীয় সকল আন্দোলন সংগ্রামে সক্রিয় ভূমিকা পালন করে যাচ্ছেন। নিজেকে নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের একমাত্র সাংগঠনিকভাবে দক্ষ লোক হিসেবে পরিনত করেন।   

আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলেও দলীয় কোনো পদ পদবী না থাকলেও হরতাল অবরোধে সরব ভূমিকা পালন করে যান একসময়ের এই তুখোর ছাত্রনেতা মাজহারুল ইসলাম জোসেফ। মূল দলের নেতাকর্মীদের দেখা না মিললেও পুলিশের রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করেই একের পর এক অবরোধ কর্মসূচিতে মাজহারুল ইসলাম জোসেফ তার অনুসারীদের নিয়ে সরব ভূমিকা পালন করে যান। বিভিন্ন সময় অবরোধের সমর্থনে বেশ সাড়া জাগানো মিছিল করেছিলেন তিনি।

সেই সাথে মূল দলের নেতাকর্মীরা তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের সাথে যোগাযোগ না রাখরেও মাজহারুল ইসলাম জোসেফ নেতাকর্মীদের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা করে চলেন। যার কারণে বর্তমানে তার কোনো পদ-পদবী না থাকলেও তার অনুসারী নেতাকর্মীদের নিয়ে বিভিন্ন কর্মসূচিতে সরব ভূমিকা পালন করে থাকেন। সেই সাথে এসকল কর্মসূচিতে নেতাকর্মীদেরও ব্যাপক উপস্থিতি দেখা যায়।

গত বছরে প্রতিকূল অবস্থায় থেকেও বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক রাষ্ট্রপতি প্রয়াত জিয়াউর রহমানের ৪২ তম শাহাদাৎ বার্ষিকী উপলক্ষে মাজহারুল ইসলাম জোসেফ সর্বোচ্চ কর্মসূচি পালন করেছিলেন। তার ধারে কাছেও যেন পৌঁছাতে পারেনি নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের দায়িত্বে থাকা নেতারা। টানা কয়েকদিন ধরেই তিনি একের পর এক কর্মসূচি পালন করেছেন। ছুটে বেরিয়েছেন শহরের একপ্রান্ত থেকে অপরপ্রান্তে।

এরই মধ্যে গত ৫ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়। আর এই পতনের তিনি আরও বেশি সক্রিয় হয়ে উঠেন। সেই সাথে সকল কর্মসূচিতেই নেতাকর্মীদের উপস্থিতির মধ্য দিয়ে নিজের অবস্থান জানান দিয়ে আসছেন।

Islam's Group