আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে অংশগ্রহণ করানো হবে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনুস। যারা অপরাধী নয়, তারা নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য অন্যদের মতোই স্বাধীন। জুলাই-আগস্টে ছাত্র আন্দোলনে হতাহতের ঘটনায় জড়িত আওয়ামী লীগ ও তাদের সহযোগীদের প্রত্যেকের বিচার নিশ্চিত করা হবে। টাইম ম্যাগাজিনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ কথা বলেছেন তিনি।
প্রধান উপদেষ্টার এমন বক্তব্যে নারায়ণগঞ্জে ক্লিন ইমেজের নেতা-নেত্রীদের খুজেঁ অপেক্ষায় রয়েছেন তৃণমূল। এদিকে ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতা আন্দোলনের হতাহত মামলায় জর্জরিত হয়ে পড়েছেন আওয়ামী লীগের সাবেক মন্ত্রী হুইপ এমপি মেয়র চেয়ারম্যান কাউন্সিলর ও দলের পদধারী-বিহীন নেতা-কর্মীরা। গ্রেপ্তার এড়াতে নারায়ণগঞ্জ ত্যাগ করে নিরাপদে রয়েছেন তারা। এদিকে সাবেক মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী কারাগারে থাকলেও বাকি হুইপ এমপিরা দেশত্যাগ করেছেন। ক্লিন ইমেজে থাকা সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভীকে একাধিক হত্যা মামলার আসামি করা হয়েছে। ছাত্র-জনতা আন্দোলনের প্রকাশ্যে সমর্থন না থাকলেও তাদের বিরুদ্ধে রাজপথে দেখা যায়নি তাকে। এদিকে ১৮ জুলাই শহর জুড়ে বিক্ষুব্ধ জনতা তাণ্ডবের পরদিন শামীম ওসমান ও তার ছেলে অয়ন ওসমানের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ যুবলীগ ছাত্রলীগ স্বেচ্ছাসেবক লীগ সহ অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা ১৯ জুলাই শহর ও জালকুড়িতে তাণ্ডব করে। ওই সময় শহরে এলোপাতাড়ি গুলিবর্ষণের ভিডিও ভাইরাল হয়ে পড়ে ফেসবুকে।
এর ফলে গত ১৭ আগস্ট থেকে বর্তমান সময়ে লাগাতার ছাত্র-জনতা হতাহত মামলায় আসামি হয়েছে জেলা মহানগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক সিনিয়র নেতারা। অন্তর্বতী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনুস বক্তব্য অনুযায়ী তারা ছাত্র-জনতা মামলা থেকে রক্ষা পাচ্ছেন তাই ক্লিন ইমেজে নেতা হতে পারেন। এতে আওয়ামী লীগ আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুযোগ দেয়া হলে নারায়ণগঞ্জে ক্লিন ইমেজে রাজনীতিবিদরা সুযোগ পেতে পারে। ইতোমধ্যে জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের পদধারী কোন নেতা-নেত্রীদের গ্রেপ্তার করেনি আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী সদস্যরা।
১৫ বছর বেশি সময়ে ক্ষমতার ছিলো আওয়ামী লীগ সরকার। পতনের সাড়ে তিন মাসই নারায়ণগঞ্জে নেতা-কর্মী শূন্য হয়ে পড়েছেন। পদধারী ও পদহীন নেতা-কর্মীরা গা-ঢাকা দিয়েছেন। এতে গত তিন মাসে নারায়ণগঞ্জের সাতটি থানায় ৬০টি অধিক ছাত্র-জনতা হতাহত মামলা দায়ের করা হয়েছে। আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা সহ নারায়ণগঞ্জের সাবেক মন্ত্রী এমপি মেয়র চেয়ারম্যান কাউন্সিলর মেম্বার ও দলীয় নেতাদের আসামি করা হয়েছে। এদের মধ্যে ওসমান পরিবারে সকলের বিরুদ্ধে লাগাতার মামলা চলমান রয়েছেন। কিন্তু ওসমানদের গ্রুপের সূতা ব্যবসায়ী নেতা লিটন সাহাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সাবেক মেয়র আইভীর বোন জামাতা জেলা যুবলীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর কাদিরকে গ্রেপ্তার করে রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ। গতকাল দুবাই একটি শপিংমলে স্ত্রী সালমা ওসমান সহ শামীম ওসমানকে দেখা গেছে। গত ৬ অক্টোবর তাকে ভারতের দিল্লীতের একটি মাজারে বিয়াই লাভলুকে সহ দেখা গেছে।
নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীরমুক্তিযোদ্ধা আব্দুর হাই ছাড়া জেলা মহানগর উপজেলা থানা ও ওয়ার্ড সভাপতি সাধারণ সম্পাদকদের বিরুদ্ধে ছাত্র-জনতা হতাহত ঘটনা মামলা দায়ের করা হয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :