News Narayanganj
Bongosoft Ltd.
ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর, ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

ব্যবসায়ীদের কাছে ক্যাসিনো ডনের ৩ কোটি টাকা চাঁদাবাজি!


দ্যা নিউজ নারায়ণগঞ্জ ডটকম | স্টাফ রিপোর্টার প্রকাশিত: নভেম্বর ১৯, ২০২৪, ০৮:০৫ পিএম ব্যবসায়ীদের কাছে ক্যাসিনো ডনের ৩ কোটি টাকা চাঁদাবাজি!

নারায়ণগঞ্জের রুপগঞ্জে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে ক্যাসিনোকাণ্ডে গ্রেপ্তার হওয়া স্বঘোষিত ডন সেলিম প্রধানের বিরুদ্ধে ৩ কোটি টাকা চাঁদাবাজির অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় রোববার ১৮ নভেম্বর দুপুরে ডন সেলিমের চাঁদাবাজি এবং সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড থেকে রক্ষা পেতে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসকের নিকট আবেদন করেছেন সাওঘাট এলাকার বিসমিল্লাহ আড়তের ব্যবসায়ীরা।

একই সাথে এদিন জেলা প্রশাসকের কার্যালয় প্রাঙ্গণে সেলিম প্রধানের চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

জেলা প্রশাসকের নিকট আবেদনপত্রে ভুক্তভোগী ব্যবসায়ীদের পক্ষে মজিবুর রহমান উল্লেখ করেন, সেলিম প্রধানের ১৬ বিঘা খালি জমি ১০ বছর মেয়াদে তার ভাড়াটিয়া চুক্তিপত্র সম্পাদিত হয় যা ২০২১ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ২০৩০ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বলবৎ এবং ২০২১ সালের ১ এপ্রিল থেকে কার্যকর হবে মর্মে চুক্তিপত্রে উল্লেখ আছে। চুক্তির শর্ত মোতাবেক তিনি উক্ত বিবাদী সেলিম প্রধানকে জামানত বাবদ ৬০ লাখ টাকা প্রদান করেন এবং পরবর্তীতে আরো ১০ লাখ টাকা প্রদান করেন।

চুক্তিপত্রের শর্ত মোতাবেক ওই জমি ১৫ লাখ ঘনফুট বালি দিয়ে ভরাট করি। বালি ভরাটকালীন ৪ লাখ টাকা গাইডবাধ, লেবার খরচসহ সর্বসাকুল্যে ১ কোটি ১৬ লাখ ৫০ হাজার টাকা খরচ করেন। যা অতিরিক্ত জামানত হিসাবে সর্বমোট ১ কোটি ৮৬ লাখ ৫০ হাজার টাকা হয়। পরে ওই জায়গায় ৮ কোটি ৬৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা খরচ করে ৩৫০টি দোকান ঘর উত্তোলন করেন তিনি। এছাড়া রাস্তা নির্মাণ, মসজিদ, অফিস নির্মাণ, বিদ্যুৎ সংযোগ, প্রয়োজনীয় টয়লেট নির্মাণ ও অজুখানা নির্মাণসহ সর্বসাকুল্যে ১০ কোটি ৫০ লাখ টাকা বিবাদী সেলিম প্রধানকে জামানত হিসাবে অগ্রিম বাবদ প্রদান করেন।

চুক্তিবদ্ধ অনুযায়ী তিনি ১০ বছর ভাড়াটিয়া হিসাবে ভোগদখল করবেন কিন্তু সম্প্রতি সেলিম প্রধান তাকে হুমকি ধমকি জীবননাশের ভয় ভীতি প্রদর্শন করে আড়ৎ দখল করার চেষ্টা করছেন। এরইমধ্যে তাকে পরপর দুইবার আড়ত থেকে তার সন্ত্রাস বাহিনী নিয়ে অবৈধভাবে দখল করে তার বিসমিল্লাহ আড়ত এ আড়তদার ব্যবসায়ীদের থেকে হুমকি ও জীবন নাশের ভয়-ভীতি দেখিয়ে প্রায় ৩ কোটি টাকা জোরপূর্বক আদায় করেন।

এ বিষয়ে রূপগঞ্জ থানায় তিনি অভিযোগ গ্রহণ করলে সেলিম প্রধানের সন্ত্রাস বাহিনীর দুই চাঁদাবাজকে গ্রেফতার করে আইনি হেফাজতে নেওয়া হয়। এখন পুনরায় তাকে ফোনে এবং বিভিন্ন ব্যক্তি মারফত জীবন নাশের হুমকি দিয়ে আসছেন ও তার আড়ত পুনরায় বেদখল করার পাঁয়তারা করতেছে। এতে তার আড়ত এর বিশাল ক্ষতি হচ্ছে। 

মানববন্ধনে বিসমিল্লাহ আড়তের পরিচালক মো. আইউব আলী বলেন, সেলিম প্রধান অবৈধভাবে এই আড়তের একেক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ২ থেকে ৩ লাখ টাকা করে প্রায় ৩ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন। এ বিষয়ে আমরা প্রশাসনের নিকট একাধিকবার অভিযোগ দিয়েছি। কিন্তু এখনো পর্যন্ত আমরা এর কোনো প্রতিকার পাই নি। তাই এ বিষয়ে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

বিসমিল্লাহ আড়তের মালিক মজিবুর রহমান বলেন, একাধিকবার আড়তে হামলা করে সেলিম প্রধান আমাদের কাছ থেকে চাঁদাবাজি করেছেন। কোনো ব্যবসায়ী টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তাকে নানানভাবে ভয়-ভীতি দেখানো হয়। এমনকি ব্যবসা করতে দিবেন না বলে হুমকি প্রদান করেন। তাই আমরা ব্যবসায়ীরা বর্তমানে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।

অভিযোগের বিষয়ে সেলিম প্রধান বলেন, এগুলো সম্পূর্ণ মিথ্যা অভিযোগ। চুক্তিনামা অনুযায়ী তারা সকল শর্ত ভঙ্গ করেছেন। তারা আমার বিরুদ্ধে যে চাঁদাবাজি মামলা দায়ের করেছিল আমি ওই মামলায় জামিন পেয়েছি। যারা বর্তমানে এগুলো করছেন সবাই আওয়ামী লীগের লোক। তারা আমার জায়গাটি দখলে নিতে এই ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছেন। আমার কাছে সব বৈধ কাগজপত্র রয়েছে। তাই এইসব মিথ্যা কথা বলে কোনো লাভ হবে না।

নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক (ডিসি) মাহমুদুল হক বলেন, এ বিষয়ে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে একটি আবেদন পেয়েছি। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।

প্রসঙ্গত, ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান চলাকালে ২০১৯ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে থাইল্যান্ডগামী বিমান থেকে নামিয়ে এনে সেলিম প্রধানকে গ্রেফতার করেছিলো র‌্যাব। এরপর তাঁর বাসা ও অফিসে অভিযান চালিয়ে দেশি-বদেশি মুদ্রা ও বিপুল পরিমাণ বিদেশি মদ জব্দ করা হয়। তখন আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বলেছিল, সেলিম প্রধান বাংলাদেশে অনলাইন ক্যাসিনো বা অনলাইন জুয়ার মূল হোতা। তিনি প্রচুর টাকা বিদেশে পাচার করেছেন।

Islams Group
Islam's Group