নারায়ণগঞ্জ আদালত থেকে বাণিজ্যিক কারণে আওয়ামী লীগ পন্থি আইনজীবীদের আদালত থেকে দূরে রাখা হয়েছে বলে মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক আবুল কায়সার আশার দেয়া বক্তব্যের সত্যতা পাওয়া গেছে। ৫ আগস্টের পর বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালীন সময় আন্দোলনকারীদের উপর হামলা, হত্যার ঘটনায় মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া আসামিরাও জামিনে বেরিয়ে এসেছে। তেমনই একজন আসামি হলেন নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের ২৭নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর ও ধামগড় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত সভাপতি সিরাজুল ইসলাম সিরাজ।
সোমবার ১৮ নভেম্বর দুপুর দেড়টায় তাকে বন্দর খেয়াঘাট সংলগ্ন বন্দর রেজিস্ট্রি অফিসে দেখা গেছে।
গত ৩ অক্টোবর দুপুরে বন্দরের ভাংতি বাজার এলাকা থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সাইফুল ইসলামের বাড়িতে সন্ত্রাসী হামলা ভাঙচুর লুটপাটের ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলা তাকে অজ্ঞাত আসামি হিসেবে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
তাকে ছাড়াতে মহানগর বিএনপি বেশ কয়েকজন নেতা জোর তদবির চালিয়ে ছিলেন বলে অভিযোগ উঠেছিলো।
একই মামলায় বন্দর উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান মাকসুদ হোসেন ও তার ছেলে মাহমুদুর রহমান শুভ এজাহারভুক্ত আসামি হলেও পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করেনি।
উল্লেখ্য, সবশেষ অনুষ্ঠিতবন্দর উপজেলা নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীর বিপক্ষে গিয়ে মাকসুদ হোসেনে পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নেয়ায় শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে সিরাজুল ইসলামকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছিল।
দীর্ঘ বছর নারায়ণগঞ্জের ওসমান পরিবারের ছত্রছায়া থেকে নিজেকে দুর্দান্ত প্রতাপশালী করে তোলা মাকসুদ হোসেন গত ৫ আগস্টের পর শেখ হাসিনার পতনে এলাকায় মিষ্টি বিতরণ করেছে। সেই সাথে মহানগর বিএনপির আহবায়ক অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খানের সাথে সখ্যতা গড়ে তুলে নিজেকে বিএনপির নেতা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা অব্যাহত আছে। ধারণা করা হচ্ছে মাকসুদ হোসেনের লবিংয়েই সিরাজুল ইসলামের জামিন করা হয়ে থাকতে পারে। কারণ কিছুদিন পূর্বে মহানগর বিএনপির আহবায়ক অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান এর চেম্বারে ছবি ভাইরাল হয়েছিল।
প্রসঙ্গত, জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষ্যে মহানগর বিএনপির একাংশের আয়োজনে সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক আবুল কাউসার আশা বলেছেন, আমরা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের সৈনিক। আমরা সেই নেতার সৈনিক যিনি বলেছিলেন উই রিভল্ট। তিনি স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন। এই আদর্শকে জানা ও বুকে ধারণ করার মধ্যে তফাত রয়েছে। আমরা অনেক লোককে দেখতে পাচ্ছি যারা মুখে শহীদ জিয়ার আদর্শের কথা বললেও কার্যক্রম সম্পূর্ণ উলটো। কোর্টে তো আওয়ামী লীগের কোনো উকিল নেই। তাদের সকলেই এখন হত্যা মামলার আসামি। তাহলে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মামলা লড়বে কে। এ মামলা গুলো করল কারা আর এ মামলায় জামিন করাচ্ছে কারা। আমরা আদর্শিক কারণে আওয়ামী লীগকে বিতাড়িত করেছি। তবে কোর্টে একদল লেদা জন্মেছে, তারা কোর্ট থেকে আওয়ামী লীগের উকিলদের ভাগাচ্ছে বাণিজ্যিক কারণে। আমরা আদর্শিক সৈনিক আর ওরা হল বাণিজ্যিক সৈনিক। তেল আর পানি যেমন একসাথে মেলে না তেমন তাদের সাথে আমাদের মেলার সুযোগ নেই।
তিনি আরো বলেন, আমরা বুক ফুলিয়ে বলতে পারি পাঁচ তারিখের পর আমরা বা আমাদের কর্মীরা কোথাও চাঁদাবাজি করতে যাইনি। পুলিশ আমাদের সবচেয়ে বেশি নির্যাতন করেছে আর আমরা যখন সুযোগ পেয়েছি তখন পুলিশকে পাহারা দিয়েছি। কারণ এই পুলিশ অপব্যবহৃত হয়েছে। আমরা সরকারি স্থাপনা পাহারা দিয়েছি কারণ এগুলো জনগণের সম্পদ। আর আপনারা বিভিন্ন সেক্টরে চাঁদাবাজি করেছেন। হাসপাতালে চিকিৎসা করিয়েছেন, সেই হাসপাতালের বিলও দেননি তিনি। তারা কথায় কথায় বলে সতেরো বছর, আন্দোলন না করলে কী জ্বীন ভ‚তে কারাগারে নিয়েছে। ২০১৪ সালে আমরা যখন পালিয়ে বেড়াচ্ছিলাম তখন আপনারা নতুন দলে যোগ দেয়ার পাঁয়তারা করছিলেন। আমরাই ছিলাম আমরাই থাকবো। কোর্ট প্রাঙ্গণে প্রমাণ পেয়েছেন নারায়ণগঞ্জের কারা।
আপনার মতামত লিখুন :