নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপিতে এবার বিভেদ ভুলে ঐক্যে ডাক দিয়েছেন সদস্য সচিব আবু আল ইউসুফ খান টিপু। রোববার মহানগর যুবদলের একাংশ গ্রুপের যুব সমাবেশে তিনি উক্তি দেন। এতে তিনি বলেন, বিএনপি যারা করেন তারা কোন গডফাদারের দালালি করবেন না আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির সাথে আতাঁত করবেন না। বিগতের দিনে যারা আতাঁত করেছেন তাদের স্মরণ করে দিতে চাই। আজকে লোক দিয়ে মিছিল করান সেদিন আপনাদের লোক কোথায় ছিলো। আজকের ঐক্যের প্রয়োজন, কার নেতৃত্বে তারেক রহমানের নেতৃত্বে। মহানগর যুবদলের আহবায়ক সদস্য সচিব ও জোসেফের ঐক্যের প্রয়োজন। আজকের তারা ঐক্য থাকে জাতীয়তাবাদী যুবদলই আওয়ামী লীগের দোসরদের বিরুদ্ধে দাঁত ভাঙ্গা জবাব দিতে যথেষ্ট।
সদস্য সচিব টিপু এমন বক্তব্যে প্রতিটি অনুষ্ঠানে দেয়া হলেও আওয়ামী লীগ জাতীয় পার্টির আতাঁতকারীদের নেতাদের নাম প্রকাশ করেন না। এতে বিএনপি নেতা-কর্মীদের মধ্যে বিব্রত ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা গেছে। ইতোমধ্যে টিপু বিরুদ্ধে তার বিদ্রোহীরা তাকেই আতাঁতকারীর প্রধান বলে আখ্যা দিয়েছেন। আওয়ামী লীগ আমলে তার বিরুদ্ধে কোন মামলা না থাকা এই নিয়ে ওসমানের নজর রয়েছে বলে মন্তব্যে উঠে আসতো। গত বছর দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে হরতাল ও অবরোধে তিনি গ্রেপ্তার হয়ে ৮২দিন কারাভোগ করেন টিপু। মহানগর নেতাদের মধ্যে অপ্রকাশ্যে ক্ষোভে টিপু জামিনে ৩মাস সময় লেগে যায় বলে জানা যায়।
২০২২ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আহবায়ক কমিটির গঠনের পর থেকে দুই গ্রæপের রাজনীতিতে রয়েছে নেতারা। দুই বছরে বেশি সময় ধরে নেতাদের এমন টান টান উত্তেজনা দিন কাটছে। আওয়ামী লীগ সরকার পতনের এক মাস পর ৬ সেপ্টেম্বর বন্দর নবীগঞ্জে সদস্য সচিব টিপুকে পিটুনি দেন তার নিজ দলের নেতা-কর্মীরা। এতে মহানগর বিএনপি বর্তমান ও সাবেক যুগ্ম আহবায়ক সহ একাধিক অঙ্গসংগঠনের নেতাদের নামে মামলা দায়ের করে আলোচিত হন টিপু।
নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব আবুল আল ইউসুফ খান টিপুকে চাপাতি ও হকিস্টিক দিয়ে হত্যা চেষ্টা অভিযোগ উঠে তার দলের যুগ্ম আহবায়ক আবুল কাউসার আশা ও বহিষ্কৃত নেতা আতাউর রহমান মুকুলের বিরুদ্ধে। ৮ সেপ্টেম্বর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে টিপু লিখেছেন, তার পাঞ্জাবি পকেট থেকে আশা ৬০ হাজার ও মুকুল সাড়ে ৮ হাজার টাকা ছিনিয়ে যায়। এদিকে টিপুর এমন অভিযোগকে হাস্যকর ও মিথ্যাচার বলে উল্লেখ্য করেছেন আবুল কাউসার ও আতাউর রহমান মুকুল। আবুল কাউসার আশা বলেছেন, টিপু গণপিটুনীকালে আমি উপস্থিত ছিলাম না। আর টিপু বলছে, আমি তাকে চাপাতি দিয়ে আঘাত করেছি। তিনি মিথ্যুক এই মামলা আবারো প্রমাণিত হয়েছে। অপরদিকে আরেক আসামি ও বহিষ্কৃত নেতা আতাউর রহমান মুকুল বলেছেন, মহানগরে বিএনপির তাদের প্রতিদ্বন্দ্বী তো আমিই আছি। তারা আমাকে মিথ্যা অপবাদ দিয়ে বিএনপি থেকে বহিষ্কার করিয়েছে। আমি মারামারির মানুষ না, মারামারি করতে জানি না। আমার সেই বয়সও নেই, ওই হামলার ঘটনায় ভিডিও ফুটেজ ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়েছে। সেই ফুটেজ দেখলেই সাধারণ মানুষ বুঝছে কারা হামলা করেছে। সেই ভিডিও ফুটেজে আমি বা আমাদের কোন লোক ছিলনা। যাদের কাছে দোষ করেছে তারাই মারধর করেছে। আমার লোকজনের এসবের সাথে জড়িত না। মূলত চাঁদা চাওয়া নিয়ে তাদের মধ্যে বিরোধ ছিল। ওই টাকা পয়সার লেনদেন নিয়ে বিরোধে হামলার ঘটনা ঘটেছে বলে শুনেছি।
নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপি নেতাদের বক্তব্যে আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির সাথে আতাঁত অভিযোগ থাকলেও তাদের নাম প্রকাশ করা হয় না। অন্যদিকে মহানগর বিএনপি নতুন কমিটির আগমন বার্তা ঐক্যের সুর ঘুরপাক খাচ্ছে চারিদিকে।
আপনার মতামত লিখুন :