নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপি সদস্য সচিব আবু আল ইউসুফ খান টিপুকে একবার ও বন্দর উপজেলা বিএনপি সভাপতি মাজহারুল ইসলাম হিরণকে দুইবার পিটুনী শিকার হয়েছে নিজ দলের নেতাকর্মীদের হাতে। টিপুর ঘটনায় মামলা হলেও ঠুকেনি হিরণ। এ অবস্থায় বন্দরে বিএনপিতে দুই গ্রুপের বাকযুদ্ধে লড়াই চলমান রয়েছেন। বর্তমানে বক্তব্যগুলো হুশিয়ারি ও হুংকারে উত্তেজনা বিরাজ করছে।
২০২২ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপি আহবায়ক কমিটি ঘোষণার মাধমে দুইগ্রুপে দ্বন্দ্ব কোন্দল ও আলোচনা সমালোচনা রূপ নিয়ে রয়েছে। আওয়ামী লীগ সরকার পতনের এক মাস পর বন্দর থানাধীন নবীগঞ্জে মহানগর বিএনপি সদস্য সচিব টিপুকে পিটুনীর ঘটনা ঘটে। এতে তার দলের সিনিয়র ও বহিস্কৃত নেতাদের উপর দোষারোপ করে থানায় মামলা করেন টিপু নিজেই। হাইকোর্টে জামিনের পর ৬ নভেম্বর নিম্ন আদালতে জামিনে যান টিপুর মামলার আসামী মহানগর বিএনপি যুগ্ম আহবায়ক আবুল কাউসার আশা ও বহিস্কৃত যুগ্ম আহবায়ক আতাউর রহমান মুকুল সহ সাত নেতাকর্মী। সেদিন আদালতপাড়ায় দুই পক্ষের শো-ডাউনে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়। পরে আদালত আসামীদের জামিন প্রদান করেন। বাকি ৩১ আসামী ১৪ নভেম্বর জামিন নিয়েছেন।
গত ১১ নভেম্বর বন্দর থানা বিএনপির একটি র্যালি শেষে টিপুর উপর হামলাকারীদের হুশিয়ারী দেন সভাপতি শাহেনশাহ আহম্মেদ। ওই সময় টিপুর উপর হামলাকারীদের অনেক কিছু করতে পারেন বলে হুংকার দেন তিনি।
তিনদিন পর ১৫ নভেম্বর নবীগঞ্জ লতিফ হাজী মোড় থেকে দড়ি সোনাকান্দা মোড় পর্যন্ত শো-ডাউন করেন আবুল কাউসার আশা। ওই সময় শাহেনশাহকে হুশিয়ারি দিয়ে বলেন, বড় বড় কথা বলেন সেই চাইলে নাকি সব কিছু করতে পারে। সোনাকান্দা মাটিতে এসে দাঁড়িয়েছি কিছু করতে পারে করেন, সোজা হেঁটে যাবো। বিড়াল যারা বাঘের মুখোশ পড়ে হাঁটছেন, আপনারা মনে রাইখেন আমি শিকারী। এত সহজে ছাড় দেয়া হবে না। আমরা এখন কি দেখতে পারছি আওয়ামী লীগের জয়েন্ট করা অনেক লোক এখন নব্য বিএনপি লুটতরাজে আখড়া চালিয়ে যাচ্ছে। এমন ঘটনাগুলো নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। বন্দরের এই সোনাকান্দা এলাকার এক নতুন দরবেশ বাবার আবির্ভাব হয়েছে। প্রথম ছিলেন জুত চোরা পরে হয়েছেন গরু চোর, বয়স বাড়া সাথে সাথে বর্তমানে হয়েছেন লোহা চোর। কোন অন্যায়, কোন অত্যাচার, কোন জুলুম আমার কোন নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করছেন ফ্যাসিবাদি সরকার আমলে যেভাবে দোসর হিসেবে চলেছেন এখন সেভাবে করছেন। ঘরে ঘরে মামলা দিচ্ছেন আপনারা যদি না শুদ্ধরান শুধু দাঁত ভাঙ্গা নয় হাত-পা ভাঙ্গা জবাব দিবো। আমাদের পরিবার ও আমাদের বিরুদ্ধে আর কোন বাজে মন্তব্য আর কোন মামলা দিচ্ছেন, তাহলে আপনাকে দেখার আছে। রাজনীতিতে শিষ্টাচার থাকা অনেক জরুরী। রাজনীতিতে কোন মঞ্চ আছে, অশিক্ষিত মূর্খের মত কথা বলেন, আজকের মধ্যে এগুলো বন্ধ করেন। বিগত সরকার পুলিশ দিয়ে হামলা মামলা দিয়ে যেভাবে আমাদের হয়রানী করেছে আপনারা সেভাবে করছে। পুলিশকে ব্যবহার করে মামলা দিয়ে আমাদের সাথে লড়াই করতে চাচ্ছেন। ১৭ বছর লড়াই করেছি, প্রয়োজনে আরো লড়াই করবো।
মহানগর বিএনপি আহবায়ক কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট বিল্লাল হোসেন বলেছেন, আহবায়ক সাখাওয়াত হোসেন খান ও সদস্য সচিব আবু আল ইউসুফ খান টিপুর হেডাম নেই। হেডাম ওয়ালা নেতাদের কাছে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপি কমিটি তুলে দেন। দেখেন বিএনপিতে কোন বিরোধ কোন্দল নামধারী নেতাদের চাঁদাবাজী থাকবে না। এখন পর্যন্ত নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আহবায়ক কমিটির মিটিং করতে পারেনি। এত সাহস আপনাদের, তাহলে আহবায়ক কমিটি নিয়ে বসতে পারলেন না কেনো। ৭ নভেম্বর (বৃহস্পতিবার) বিকালে শহরের ডিআইটিতে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আয়োজনে ৭ নভেম্বর জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।
আপনার মতামত লিখুন :