রোববার ঢাকা সহ সারাদেশ নূর হোসেন দিবস পালন ও বিক্ষোভ মিছিলের কর্মসূচির ডাক দিয়েছিল আওয়ামী লীগ। কিন্তু রাজধানীতে ছাত্র জনতার বাধার মুখে দাঁড়াতেই পারেনি আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। অন্যদিকে নারায়ণগঞ্জ শহর ও শহরতলীতে আওয়ামী লীগের কোন তৎপরতা দেখাই যায়নি। যদিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিজেদের অবস্থান জানান দিবে এমন বার্তা দিয়ে আসছিল নারায়ণগঞ্জে গা ঢাকা দিয়ে থাকা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা।
আওয়ামী লীগ মাঠে না নামলেও মাঠে ছিল বিভিন্ন রাজনৈতিক দল সহ ছাত্ররা। নারায়ণগঞ্জ শহরের চাষাঢ়া, বঙ্গবন্ধু সড়ক, সাইনবোর্ড, শিমরাইল, সোনারগাঁ, রূপগঞ্জ, এলাকায় দেখা গেছে রাজনৈতিক নেতাকর্মী এবং ছাত্রদের সতর্ক অবস্থান। আওয়ামী লীগকে প্রতিহত করার লক্ষ্যে ঐক্যবদ্ধ থাকতে দেখা গেছে তাদের।
শহরের চাষাঢ়া শহীদ মিনার এলাকায় সকাল থেকে ছিল বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অনুসারী শিক্ষার্থীদের সরব উপস্থিতি। বঙ্গবন্ধু সড়কে ছিল মহানগর বিএনপির মহড়া এবং সরব অবস্থান। সাইনবোর্ড এলাকায় মহড়া এবং অবস্থান নিতে দেখা গেছে বিএনপি ও জামায়াতের নেতাকর্মীদের। সিদ্ধিরগঞ্জের শিমরাইল এলাকায় ছিল বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অনুসারী শিক্ষার্থীদের সতর্ক অবস্থান। লাঠিসোটা নিয়ে মহড়া দিয়েছেন তারা।
সোনারগাঁয়ের কাচপুর এলাকায় বিএনপির একাধিক গ্রুপ মহড়া দেয়। আওয়ামী লীগের কর্মসূচির প্রতিবাদে মিছিলও করেছে জামায়াতে ইসলামির নেতাকর্মীরা। এছাড়া রূপগঞ্জের কাঞ্চন, রূপসি এবং তারাব মোড়ে ছিলো বিএনপি নেতাকর্মীদের সরব অবস্থান। যদিও আওয়ামী লীগ পতনের পর বিএনপি, জামায়াত এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃবৃন্দের মধ্যে প্রতিযোগিতা ও অভ্যন্তরীণ সমালোচনায় মুখোর হতে দেখা গেছে। বিভিন্ন সময় একে অপরকে উদ্দেশ্য করে প্রকাশ্য সমালোচনাও করেছেন।
কিন্তু তাদের এই সমালোচনা উবে যায় আওয়ামী লীগকে প্রতিহত করার লড়াইয়ে। জুলাই বিপ্লবে যেমন রাজনৈতিক বৈরিতা ভুলে আওয়ামী ফ্যাসিবাদী শাসনের বিরুদ্ধে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়াই করেছেন। ঠিক একইভাবে আওয়ামী লীগকে প্রতিহত করার ডাকে মুহূর্তেই একত্রিত হয়েছেন। যা নিজেদের ঐক্যবদ্ধ রাজনীতি করার সম্ভাবনাকে আরও উজ্জীবিত করে তোলে। আশার আলো দেখায় সাধারণ মানুষকে।
নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক আব্দুস সবুর খান সেন্টু বলেন, ‘আওয়ামী লীগের ফ্যাসিবাদী শাসন আমল আমরা ভুলিনি। ফলে তাদের প্রতিহত করার জন্য আমাদের সর্বদা সতর্ক অবস্থান ছিলো আছে থাকবে। জামায়াত, ইসলামি আন্দোলন সহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলের সাথে পার্থক্য থাকাটা স্বাভাবিক। কিন্তু আওয়ামী লীগের প্রশ্নে আমরা এক। কারণ আমরা কেউই চাইবো না ফ্যাসিবাদী শক্তি আবারও সক্রিয় হোক এবং দেশের মানুষের উপর জগদ্দল পাথরের মত চেপে বসে থাকুক।
একই অভিমত প্রকাশ করেন জামায়াতে ইসলামির প্রচার ও মিডিয়া সম্পাদক হাফেজ আব্দুল মোমিন। তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ একটি ফ্যাসিবাদী দল। এই দেশে গণহত্যা চালানোর পর তাদের ফের স্বাভাবিক রাজনীতিতে ফেরার সুযোগ নেই। এই দেশের মানুষ তাদের গ্রহণ করবে না। তাই দল মত নির্বিশেষে সবাইক ঐক্যবদ্ধ ভাবে আওয়ামী লীগকে প্রতিহত করতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। সেই বাস্তবতাই দেখা গেছে আওয়ামী লীগের কর্মসূচিকে ঘিরে। সাধারণ মানুষ দল মতের ভেদাভেদ ভুলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে আওয়ামী লীগকে প্রতিহত করেছে।’
আপনার মতামত লিখুন :