সকাল থেকেই নারায়ণগঞ্জ আদালতপাড়ায় মানুষের জটলা। বেলা যত বাড়ে ততই মানুষের সংখ্যা বাড়ে। সাড়ে ১০টা নাগাদ আদালতপাড়ায় মানুষ কানায় কানায় পরিপূর্ণ। মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব আবু আল ইউসুফ খান টিপু ব্যস্ত মোবাইল নিয়ে। একে একে নেতাকর্মীরা এসে তার সামনে জড়ো হতে থাকে। অবস্থান নেয় জেলা আইনজীবী সমিতি ভবনের সামনে। আরেক গ্রুপ মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক আবুল কাউসার আশা। তার অনুসারীরা পুরো আদালতপাড়ায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে। টান টান উত্তেজনা। কারণ এদিন টিপুর মামলায় আশার হাজিরা ছিল। উত্তেজনাকর পরিস্থিতিতে মধ্যদুপুরে আদালতে শুনানী হয়। জামিন পান আশা। মুহূর্তে উল্লাসে মেতে উঠে অনুসারীরা। আর বিষন্ন মন নিয়ে বাড়িতে ফিরে যান টিপু সহ তাঁর ডাকে আসা অনুসারীরা।
আদালতপাড়ায় উপস্থিতিরা শেষে এক কথায় বলেন, ‘একজন আবুল কাউসার আশায় পরাস্ত বিএনপির বাঘা বাঘা নেতারা।’
টিপুর পক্ষে আদালতে শুনানী করেন মহানগর বিএনপির আহবায়ক সাখাওয়াত হোসেন খান। এছাড়াও ছিলেন আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার প্রধান।
টিপুর পক্ষে দলবল নিয়ে সকাল থেকেই আদালতপাড়ায় অবস্থান নেন বন্দর থানা বিএনপির সভাপতি শাহেন শাহ, মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক রেজা রিপন, মহানগর যুবদলের আহবায়ক মনিরুল ইসলাম সজল, যুবদর নেতা মাজহারুল ইসলাম জোসেফ, যুবদল নেতা মোয়াজ্জেম হোসেন মন্টি, বিএনপি নেতা শাহীন আহমেদ, সজুন প্রমুখ।
বিপরীতে নেতাবিহীন কর্মীতে বেষ্টিত ছিলেন আবুল কাউসার আশা। ছাত্রদলের সাবেক এ নেতা ইতোপূর্বে স্বেচ্ছাসেবক দলের দায়িত্ব পালন করেন। বন্দর ও শহর এলাকাতে রয়েছে তাঁর বিশাল জনপ্রিয়তা। রয়েছে বিশাল একটি কর্মীবাহিনী যারা বিগত দুর্দিনেও আশাকে ছেড়ে যায়নি। অকৃত্রিম ভালোবাসার টানেই পদ পদবীর লোভ লালসাকে পেছনে ফেলে এদিন আদালতে আসেন আশা ভক্তরা।
দুপুরে শুনানী শেষে জামিন পান বন্দর সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আতাউর রহমান মুকুল এবং নাসিকের ২৩ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সভাপতি আবুল কাউসার আশা। ৬ নভেম্বর দুপুরে নারায়ণগঞ্জ চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আব্দুর রহমান আদালতে উচ্চ আদালতের জামিন বহালের আবেদন করলে আদালত তা মঞ্জুর করেছেন। এ মামলায় ৫৩ জন আসামির মধ্যে আশা সহ ৭ জনের আগাম জামিন মঞ্জুর করেছেন উচ্চ আদালত। উচ্চ আদালতের জামিন বহালের আবেদনের শুনানি চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে অনুষ্ঠিত হয়।
এর আগে গত ৬ সেপ্টেম্বর বিকেলে বন্দরে বিএনপির একটি কর্মসূচীতে যাওয়ার সময়ে নবীগঞ্জ ঘাটের অদূরে তিন রাস্তার মোড়ে জমায়েত হয় মহানগর বিএনপির নেতারা। হঠাৎ করেই ৪০ থেকে ৫০ জন যুবক মিলে লাঠিসোটা ও বাশ নিয়ে তাদের ধাওয়া করে। এতে অনেকে পালিয়ে যেতে সক্ষম হলেও মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব আবু আল ইউসুফ টিপুকে রাস্তায় ফেলে মারধর করা হয়।
এ ঘটনায় গত ৭ সেপ্টেম্বর রাতে আহত অ্যাডভোকেট টিপু বাদী হয়ে বন্দর থানায় ২০৩ জনকে আসামি করে হত্যাচেষ্টার মামলা দায়ের করেন। মামলায় আবুল কাউসার আশা, আতউর রহমান মুকুলসহ ৫৩ জনের নাম উল্লেখ করা হয়। এ মামলা অজ্ঞাত আরও ১৫০ জনকে আসামি করা হয়।
আপনার মতামত লিখুন :