নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা থানা বিএনপির সভাপতি শহীদুল ইসলাম টিটুর বিরুদ্ধে ৬ কোটি টাকার একটি বাড়ি জোর করে দখলের অভিযোগ উঠেছে। পারিবারিক দ্বন্দ্বের জের ধরে এক পক্ষকে ম্যানেজ ও ভয় ভীতি দেখিয়ে মাত্র ১ কোটি ৩৫ লাখ টাকায় ওই বাড়ি কিনে নেওয়ার চেষ্টা করছেন। এ ঘটনায় ক্ষোভ ও অভিমানে সৌরভ নামের এক যুবক আত্মহত্যার চেষ্টা করেছে।
৩১ অক্টোবর বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ফতুল্লার কুতুবপুরে ওই ঘটনা ঘটে।
হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া সৌরভের বন্ধু শাহ আলম বলেন, মূলত বাড়ির এই জমিটা নিয়ে ওদের পারিবারিক সমস্যা চলছিল। কিন্তু শহীদুল ইসলাম টিটু এখানে তৃতীয়পক্ষ হয়ে ঢুকে অর্ধেক জমি নিজের নামে নিয়ে নিতে চাচ্ছে। জমিসহ এই বাড়ির বর্তমান মূল্য হবে প্রায় ৬ কোটি টাকা। কিন্তু টিটু সাহেব প্রভাব খাটিয়ে অর্ধেক বাড়ি তা ১ কোটি ৩৫ লাখ টাকায় নিতে চাচ্ছে। তা দিতে সৌরভ অস্বীকৃতি জানানোয় সে সৌরভকে নানাভাবে চাপ দিয়ে আসছেন। এ কারণে সে মানসিক চাপ থেকে বিষ খেয়ে আত্মহত্যা করার চেষ্টা করেন। বর্তমানে সৌরভ ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে ভর্তি আছেন।
সৌরভের সৎ বোন জান্নাতুল ফেরদৌস বলেন, ২০১৬ সালে আমার বাবা খলিলুর রহমান নয়ামাটি এলাকায় অবস্থিত অর্ধেক বাড়ি আমাদের নামে লিখে দেয়। কিন্তু সৌরভ ও তার মা এই অর্ধেক বাড়ি আমাদের বুঝিয়ে না দিয়ে আমাদের মেরে ফেলার হুমকি দেন। আমার বাবা বারবার বুঝিয়ে দেওয়ার অনুরোধ করলেও আমাকে বাবার সঙ্গেও খারাপ আচরণ করেন। পরে আর কোনো উপায় না পেয়ে দেড় মাস আগে আমরা সৌরভের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করি। অভিযোগের প্রেক্ষিতে ঘটনাস্থলে পুলিশ গেলে পুলিশের সামনেই সৌরভ আমাদের গায়ে হাত তুলেন। পরে আমরা টিটু ভাইকে অনুরোধ করলে সে এটা আমাদের কাছ ১ কোটি ২০ লাখ টাকায় কিনে নেন। এরই মধ্যে বায়নাও করেছেন। কিন্তু সৌরভ তা না বুঝিয়ে দিয়ে তালবাহানা করে যাচ্ছেন।
এ বিষয়ে শহীদুল ইসলাম টিটু বলেন, পুরো বিষয়টিই মিথ্যা। মূলত সৌরভের বাড়ির জমিটি নিয়ে তাদের পারিবারিক দ্বন্ধ চলছে। তার বাবার দুই সংসার। সৌরভ হচ্ছেন তার বাবার প্রথম ঘরের সন্তান। মূলত সৌরভের বাবা এবং তার সৎ মায়ের পরিবার গত ১০ বছর ধরে তাদের পাওনা জমি বুঝিয়ে দেওয়ার অনুরোধ করেন। কিন্তু যতোবারই তারা এটা নিয়ে ফয়সালা করার চেষ্টা করেছেন ততবারই সৌরভ, তার মা তাদের মারধর করে তাড়িয়ে দিতেন। এ বিষয়ে তারা থানায় শরণাপন্ন হলে থানা থেকে বিষয়টা আমাকে মীমাংসা করে দিতে বলেন। পরে আমি সৌরভকে তাদের জমি বুঝিয়ে দিতে বললেও সে তা শোনেন নি। এদিকে সৌরভের বাবা এবং তার সৎ মা আমার কাছে বারবার অনুরোধ করলে পাওনা জমিটা আমি বায়না করে নেই। পরবর্তীতে বিষয়টি সৌরভ জানার পর একের পর এক নাটক করে আসছে। সৌরভ মূলত আওয়ামী লীগের কর্মী ছিল ও মাদকাসক্ত। সে অতিরিক্ত নেশা করে বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। কিন্তু সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে আমাকে দোষারোপ করে হেয় প্রতিপন্ন করছেন। আমি এরই মধ্যে থানায় একটি জিডি করছি। সেই সঙ্গে তার বিরুদ্ধে আইসিটি অ্যাক্টে মামলা করবো।
আপনার মতামত লিখুন :