নারায়ণগঞ্জে হিন্দু সম্প্রদায়ের বিভিন্ন সংগঠনকে নেতৃত্ব দেওয়া নেতারা মূলত প্রচন্ডভাবে আওয়ামী লীগ ঘেঁষা ও পলাতক সাবেক এমপি শামীম ওসমানের আস্থাভাজন হিসেবেই পরিচিত। বিগত দিনে শামীম ওসমানের ডাকে বিভিন্ন সভা সমাবেশে যেমন যোগ দিয়েছিলেন তেমনি শামীম ওসমানের বিভিন্ন ব্যক্তিগত ইস্যুতেও আন্দোলন করেছিলেন। সংগঠনগুলোর জেলা ও মহানগরের বেশীরভাগ নেতা সরাসরি শামীম ওসমান ও মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পলাতক খোকন সাহার ঘনিষ্ঠজন হিসেবেই পরিচিত। এ সংগঠনগুলোর মধ্যে শুদ্ধি অভিযান না চালানো হলে ভবিষ্যতে এর ভেতর থেকেও কোন ধরনের আন্দোলনের সূচনা হতে পারে ধারণা অনেকের।
হিন্দু সম্প্রদায়ের একাধিক নেতা জানান, পূজা উদযাপন পরিষদের কমিটি মূলত বিগত দিনে শামীম ওসমানের ইশারাতেই হতো। ৫ আগস্ট হাসিনা সরকারের পতনের পর পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে শুরুতে কয়েকদিন নেতারা একটু সূরে সরে ছিল। পরে মহানগর বিএনপির একজন শীর্ষ নেতার সঙ্গে বৈঠক ও সমঝোতা করে তারা প্রকাশ পান। এর মধ্যে শারদীয় দুর্গাপূজার আগে বিএনপি নেতাদের ম্যানেজ করেন তারা। এ কারণে কোন ধরনের ঝুঁকি ছাড়াই নারায়ণগঞ্জে দুর্গোৎসব শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হয়।
সংশ্লিষ্টরা জানান, নারায়ণগঞ্জ জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি শংকর কুমার দে মূলত একজন সাংবাদিক। তিনি জনকণ্ঠের সিনিয়র সাংবাদিক। রাজনীতিতে তিনি বিগত দিনে প্রকাশ্য জড়াননি। তাঁকে নিয়ে বিতর্কও কম। জেলার সাধারণ সম্পাদক শিখন সরকার শিপন ছিলেন মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক খোকন সাহার অনুসারী। এছাড়া শামীম ওসমানের বিভিন্ন সভা সমাবেশেও তিনি থাকতেন। সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভীর বিরুদ্ধে জিউস পুকুর দখল নিয়ে যে সভা সমাবেশ হতো নিয়মিত সেটার আয়োজক ছিলেন এ শিখন। এরই মধ্যে ৪ আগস্ট নতুন কোর্ট এলাকাতে হামলার ঘটনায় তাঁর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
মহানগর পূজা উদযান পষিদের সাধারণ সম্পাদক সুশীল দাসও শামীম ওসমানের অনুসারী হিসেবেই পরিচিত ছিলেন।
এর মধ্যে পূজার আগে জামায়াতে ইসলামী নেতাদের সঙ্গে পূজা উদযাপন পরিষদের নেতাদের বৈঠক হয়। সেখানে নেতারা জানান, বিগত দিনে একটি রাজনৈতিক দল তাদেরকে বিএনপি বা জামায়াতের সঙ্গে মিশতে দেয়নি। ফলে জামায়াত সম্পর্কে হিন্দু নেতাদের ধারণা ছিল ভিন্ন। কিন্তু ৫ আগস্টের পর সেই ধারণা পাল্টে গেছে।
সংশ্লিষ্টদের মতে, নানা ইস্যু তৈরির চেষ্টা চলছে দেশে। কখনো সাম্প্রদায়িক উস্কানি কিংবা নানা ধরনের ফাঁদ তৈরি করে দেশকে অস্থিতিশীল করার পায়ঁতারা করা হচ্ছে। ফলে হিন্দু সম্প্রদায়ের এসব কমিটির নেতাদের বিষয়েও সজাগ থাকা প্রয়োজন সকলের। কারণ তারা মূলত আওয়ামী লীগ ঘরনার হিসেবেই পরিচিত।
আপনার মতামত লিখুন :