তানভীর মুহাম্মদ ত্বকীর বাবা ও সন্ত্রাস নির্মূল ত্বকী মঞ্চের আহবায়ক রফিউর রাব্বি বলেন, ওসমান পরিবার দেশে আছেন নাকি বিদেশে পালিয়ে গেছেন আমরা ঠিক জানি না। কেউ বলেন তারা দেশে আছেন আবার কেউ বলেন তারা পালিয়ে গেছেন। যদি তারা পালিয়েই যায় তাহলে এই দায় গোয়েন্দা সংস্থা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকেই নিতে হবে। যেখানে একটা গরু-ছাগল বর্ডার ক্রস করতে পারে না, বর্ডারে গুলি করে হত্যা করা হয় সেখানে ওসমান পরিবারের খুনীরা-জল্লাদরা দেশ থেকে কীভাবে পালিয়ে যায়? যদি কোনো সংস্থা তাদের সাহায্য না করে তাহলে তারা কখনোই দেশ ছেড়ে পালাতে পারবেন না। আমরা আজ ত্বকী হত্যার ১৪০ মাস পর ত্বকী হত্যার বিচার কামনা করছি।
শুক্রবার ৮ নভেম্বর সন্ধ্যায় শহরের আলী আহাম্মদ চুনকা নগর মিলনায়তন প্রাঙ্গণে নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোটে উদ্যোগে আয়োজিত কর্মসূচিতে তিনি এসব কথা বলেন। এদিন তানভীর মুহাম্মদ ত্বকী হত্যা ও বিচারহীনতার ১৪০ মাস উপলক্ষ্যে আলোক প্রজ্বালন কর্মসূচি পালন করা হয়।
তিনি বলেন, বিচারহীনতার সংস্কৃতি থেকে আমরা বেরিয়ে আসতে চাই। আমরা ত্বকী হত্যার বিচারের সঙ্গে সাগর-রুনী হত্যার বিচার চেয়েছি। আশিক, বুল, চঞ্চলসহ ওসমান পরিবার দ্বারা নারায়ণগঞ্জে সংগঠিত সকল হত্যাকাণ্ডে বিচার চাই। আমরা এইসব বিচার দ্রুত ও সুষ্ঠুভাবে দেখতে চাই। সেই সঙ্গে জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতা অভ্যুত্থানে নিহত ও বিচার বহির্ভূত সকল হত্যাকাণ্ডের বিচার চাই।
নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি জিয়াউল ইসলাম কাজলের সভাপতিত্বে এবং সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) এর সভাপতি ধীমান সাহা জুয়েলের সঞ্চালনায় এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন সামাজিক সংগঠন সমমনার উপদেষ্টা দুলাল সাহা, খেলাঘর আসরের সাবেক সভাপতি রথীন চক্রবর্তী, সাংবাদিক হালিম আজাদ, গণসংহতি আন্দোলনের সমন্বয়কারী তরিকুল ইসলাম সুজন প্রমুখ।
প্রসঙ্গত, ২০১৩ সালের ৬ই মার্চ বিকাল ৪টার দিকে নারায়ণগঞ্জ শহরের শায়েস্তা খান রোডের বাসা থেকে বেরিয়ে স্থানীয় সুধীজন পাঠাগারে যাওয়ার পথে নিখোঁজ হয় এবিসি ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের শিক্ষার্থী তানভীর মুহাম্মদ ত্বকী (১৭)। পরে ৮ মার্চ শীতলক্ষ্যা নদীর কুমুদিনী খাল থেকে ত্বকীর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। ত্বকীর মরদেহ উদ্ধারের পর ত্বকীর বাবা রফিউর রাব্বি বাদী হয়ে অজ্ঞাত আসামিদের বিরুদ্ধে নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরে ওই বছরের ১৮ই মার্চ ত্বকী হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় শামীম ওসমান, তার ছেলে অয়ন ওসমান, জেলা যুবলীগের বহিষ্কৃত নেতা জহিরুল ইসলাম পারভেজ ওরফে ক্যাঙারু পারভেজ, জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি রাজীব দাস, সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান সুজন, সালেহ রহমান সীমান্ত ও রিফাত বিন ওসমানসহ অজ্ঞাতনামা আরও ৮-১০ জনের বিরুদ্ধে পুলিশ সুপারের কাছে সম্পূরক অভিযোগপত্র জমা দেন ত্বকীর বাবা।
আপনার মতামত লিখুন :