নারায়ণগঞ্জ শহরে প্রস্তাবিত একাধিক প্রকল্প বাস্তবায়নে বার বার উঠে এসেছে সড়ক যোগাযোগের কথা। বিপুল পরিমান মানুষ ও যানবাহনের চাপ সামাল দিতে বারবারই বলা হচ্ছে উড়াল সড়ক বা উড়ালপথ নির্মাণের কথা। কিন্তু ঘনবহুল এই শহরে যেখানে বিদ্যমান মানুষ ও যানবাহনের চাপেই সড়কগুলো অবরুদ্ধ হয়ে থাকে। সেখানে উড়াল সড়কের জন্য নতুন করে পিলার স্থাপিত হলে ভোগান্তি বাড়বে কয়েকগুন। যা নিয়ে আপত্তি জানিয়েছেন নাগরিক প্রতিনিধিরা।
নারায়ণগঞ্জ শহরের মাঝেই অন্তত চারটি প্রকল্প বাস্তবায়নের কথা বলছে একাধিক সংস্থা। এর মধ্যে রয়েছে খানপুর কন্টেইনার টার্মিনাল নির্মান প্রকল্প এবং শীতলক্ষ্যা নদীর উপর কদম রসুল সেতু নির্মান প্রকল্প। খানপুরের কন্টেইনার টার্মিনাল নির্মাণ করা হলে এখানকার মালামাল পরিবহনের জন্য চলাচল করবে বিপুল সংখ্যক ট্রাক ও কাভার্ডভ্যান। যা নির্বিঘ্নে চলাচলের জন্য উড়াল সড়ক নির্মানের প্রস্তাবনা এসেছে। উড়াল সড়ক খানপুর থেকে চাষাঢ়া হয়ে লিংক রোডে প্রবেশ করবে। এই উড়াল সড়কের কাজ শুরু হলেও স্থবির হয়ে যাবে নারায়ণগঞ্জ শহর। যেমনটি বিগত সময়ে ঢাকার গুরুত্বপুর্ন সড়কগুলো স্থবির হয়ে ছিলো বছরের পর বছর।
কেবলমাত্র কিছু কন্টেইনার মালামালের জন্য লাখো মানুষকে প্রতিদিন ভোগান্তির শিকার হওয়াকে অযৌক্তিক এবং অপরিকল্পিত প্রস্তাবনা বলে জানিয়েছেন নাগরিক নেতৃবৃন্দরা। এমনকি এই প্রকল্পকে অপ্রয়োজনীয় বলেও মন্তব্য করেছেন কেউ কেউ।
নারায়ণগঞ্জ জেলার মধ্যেই শীতলক্ষ্যা নদীর উপর মোট পাঁচটি সেতু নির্মাণ করা হয়েছে। এগুলো হচ্ছে রূপগঞ্জের গাজী সেতু, সুলতানা কামাল সেতু, কাচপুর নতুন ও পুরাতন সেতু এবং নাসিম ওসমান সেতু। নতুন করে শহর ও বন্দরের মধ্যে আরও একটি সেতু নির্মাণে মরিয়া হয়ে উঠছে সিটি করপোরেশন। কদমরসুল সেতু প্রকল্প নাম দিয়ে শহরের ভেতর দিয়ে সেতু নির্মান করতে চান তারা। কিন্তু এর ফলে নবাব সিরাজউদদৌলা সড়কের উপর নির্মান করা হবে ব্রিজের উঠা ও নামার পথ। সংকুচিত সড়ক আরও সংকুচিত হয়ে পড়বে। সেই সাথে নির্মান চলাকালে বন্ধ হয়ে যাবে এই সড়কের স্বাভাবিক চলাফেরা।
এছাড়া মেট্রোরেল নারায়ণগঞ্জে প্রবেশ করা, শহরের চাষাঢ়া রেলস্টেশন থেকে নারায়ণগঞ্জ রেলস্টেশন পর্যন্ত ট্রেনের উড়ালপথ নির্মান করার প্রস্তাবনাও উঠে আসছে। যেগুলো বাস্তবায়ন হলে পুরো নারায়ণগঞ্জ পরিনত হবে পিলারের শহরে।
নগর পরিকল্পনাবিদরা বলছেন, বিপুল মানুষের যাতায়াতের জন্য মেট্রো ব্যাতিত অন্য কারনে উড়াল পথ নির্মান শহরের স্বাভাবিক চলাচলকে ক্ষতিগ্রস্থ করে। মূল শহরের বুকে ফ্লাইওভার, উড়াল সড়ক শহরকে বসবাসের অযোগ্য করে তুলবে। তাই শহরের স্বাভাবিক চলাচল বজায় রাখতে সড়ক প্রশস্থ করা এবং আইনের প্রয়োগ জরুরি। অন্যথায় এসব অবকাঠামো নির্মাণ করে শহরকে ঠিক রাখা সম্ভব হবে না।
আপনার মতামত লিখুন :