বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে নারায়ণগঞ্জের ৫ টি আসনের সাবেক সংসদ সদস্যরা ছিলেন বিশাল প্রভাবশালী যার মধ্যে সাবেক এমপি শামীম ওসমান, নজরুল ইসলাম বাবু, গাজী গোলাম দস্তগীর গাজী তাদের নিজ নির্বাচনী এলাকায় ধরাকে সরা জ্ঞান করেছেন। তাদের নির্বাচনী এলাকায় তারা নিজেরাই ছিলো সব কিছুর নিয়ন্ত্রক। যেন গাছের একটি পাতাও তাদের হুমক ছাড়া নড়ার সাহস করতেন না। বিশেষ করে রূপগঞ্জে সাবেক এমপি গাজী গোলাম দস্তগীর নিজ এলাকায় যা চাইতেন তাই করতেন। সহ ধর্মিনী হাসিনা গাজীকে বানিয়ে ছিলেন তারাব পৌরসভার মেয়র। এক সময়কার পিএস হাবিবুর রহমানকে বানিয়েছিলেন উপজেলা চেয়ারম্যান। কাঞ্চন পৌরসভাতেও মেয়র হিসাবে নির্বাচিত করিয়ে ছিলেন তারই আজ্ঞাবহ লোক। পৌরসভা, উপজেলা, ইউনিয়ন সর্বত্র বসিয়ে ছিলেন তার লোক। দুর্দান্ত প্রভাবশালী এই নেতা একাদশ জাতীয় সংসদের বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী হিসাবেও দায়িত্ব পালন করেছিলেন।
ছাত্র জনতার আন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী সরকারের পতন হলে দেশ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যান ফ্যাসিস্ট সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেই সাথে পালিয়ে যান ওই সরকারের মন্ত্রী এমপিরাও। নারায়ণগঞ্জে সাবেক সংসদরাও পালিয়ে যান। তাসের ঘরে মত ভেঙে পরে। নারায়ণগঞ্জের সাবেক এমপিদের শামীম ওসমান, নজরুল ইসলাম বাবু ও কায়সার হাসনাত বিদেশে পাড়ি জমিয়েছেন। সেলিম ওসমানের অবস্থা এখনো স্পষ্ট নয়। কিন্তু দেশ ত্যাগ করতে পারেননি সাবেক মন্ত্রী গাজী গোলাম দস্তগীর। গত ২৫ আগস্ট ঢাকা থেকে তিনি গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। এরপর কয়েক দফায় বিভিন্ন মামলায় তাকে রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে।
সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সাবেক মন্ত্রী গাজী গোলাম দস্তগীরের গারদের ভেতরকার একটি ছবি ভাইরাল হয়েছে। সেখানে তিনি লুঙ্গি ও চেক টিশার্ট পড়ে একটি নীল রঙের প্লাস্টিকের চেয়ারের উপর বসে ছিল। লুঙ্গিটি হাটু পর্যন্ত ভাঁজ করা। গারদের ভেতরকার তার ছবি দেখে বুঝার উপায় নেই তিনি এক সময়কার দুর্দান্ড প্রভাবশালী সাবেক মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী।
ছবিটি নিয়ে বেশ আলোচনা সমালোচনার সৃষ্টিও হয়েছিল। অনেকেই সমালোচনা করে বলেছিলেন গত ১৫ বছর গাজী নিজ এলাকায় ছিলেন অপ্রতিরোধ্য, ক্ষমতার মসনদে বসে তিনি আলাদা সা¤্রাজ্য তৈরি করেছিলেন রূপগঞ্জকে। যেখানেই চোখ গিয়েছে সেখানেই গাজী এবং তার পরিবারের সদস্যদের নাম দেখা গেছে। বেসরকারি স্থাপনা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সহ সরকারি স্থাপনা গুলোও তাদের নামে নামকরণ করা হয়েছে। একের পর একর জমি দখল করেছেন গাজী গ্রæপের সাইনবোর্ড ব্যবহার করে। তিনি কি কখনো কল্পনা করেছিলেন উনার এমন পরিণতি বরণ করতে হবে। যে পুলিশ কর্মকর্তারা তাঁকে স্যার বলে স্যালুট দিয়েছেন সেই কর্মকর্তারাই তাকে গারদ ঘরে বন্দি করে রাখবেন।
সমালোচকরা আরো বলেন, গাজীর এমন পরিণত থেকে দেশের রাজনীতিবিদদের শিক্ষা নেওয়া উচিত। ভবিষ্যতে যারা নেতৃত্বে আসবেন, সরকার পরিচালনা করবেন তারা যেন গাজী সহ বাকি সকলের পরিণতির কথা মাথায় রাখেন। কারণে ভবিষ্যতে তাদেরকেও এমন পরিণতি বরণ করতে হতে পারে যদি তারা আওয়ামী লীগের মতই দেশ পরিচালনায় ভুল পন্থা অবলম্বন করেন।
আপনার মতামত লিখুন :