News Narayanganj
Bongosoft Ltd.
ঢাকা বুধবার, ২২ জানুয়ারি, ২০২৫, ৯ মাঘ ১৪৩১

উপাধ্যক্ষের অপসারণ আবেদন ফের তদন্তের নির্দেশে মিশ্র প্রতিক্রিয়া


দ্যা নিউজ নারায়ণগঞ্জ ডটকম | স্টাফ রিপোর্টার প্রকাশিত: জানুয়ারি ২১, ২০২৫, ১০:৪৪ পিএম উপাধ্যক্ষের অপসারণ আবেদন ফের তদন্তের নির্দেশে মিশ্র প্রতিক্রিয়া

নারায়ণগঞ্জ শহরের মাসদাইরে অবস্থিত তানজিম হোমিওপ্যাথি মেডিকেল কলেজের উপাধ্যক্ষ ডা. শারমিন আক্তার ভুঁইয়াকে অপসারণের বিষয়ে শিক্ষক শিক্ষার্থীদের অভিযোগের তদন্ত রিপোর্ট প্রকাশে লুকোচুরি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন শিক্ষক শিক্ষার্থীরা।

প্রায় ২ মাস পূর্বে তদন্ত কার্যক্রম শেষ হলেও সেই তদন্ত রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়নি। বরং তদন্ত কর্মকর্তার রিপোর্ট অসম্পূর্ণ উল্লেখ করে পুনরায় তদন্তের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। যা নিয়ে শিক্ষক শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।

অভিযোগে জানা গেছে, তানজিম হোমিওপ্যাথি মেডিকেল কলেজের উপাধ্যক্ষ ডা. শারমিন আক্তার ভুঁইয়ার বিরুদ্ধে কলেজের শিক্ষকমন্ডলী ও প্রাক্তন শিক্ষার্থীবৃন্দ অসদাচরণসহ বিভিন্ন অভিযোগের প্রেক্ষিতে তার অপসারণের জন্য গত সেপ্টেম্বর মাসে প্রতিষ্ঠানটির গভর্নিং বডির সভাপতি ও জেলা প্রশাসক বরাবরে আবেদন করেন। একই সময়ে উপাধ্যক্ষ ডা. শারমিন প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) ডা. মো. আশরাফুর রহমানের বিরুদ্ধে তার যোগ্যতাসহ অসদাচরণ এর অভিযোগ করেন। গত ১৭ সেপ্টেম্বর জেলা প্রশাসকের নির্দেশনা অনুযায়ী গত ১৭ নভেম্বর তদন্ত কার্যক্রম শুরু করেন

নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসনের সিনিয়র সহকারী কমিশনার (শিক্ষা) মো. মাসুদ রানা। গত ১৭ নভেম্বর অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) ডা. মো. আশরাফুর রহমান, উপাধ্যক্ষ ডা. শারমিন আক্তার ভূইয়াসহ তানজিম হোমিওপ্যাথি মেডিকেল কলেজের শিক্ষক ও প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের নিম্ম্নস্বাক্ষরকারী তদন্তকারী কর্মকর্তার অফিস কক্ষে শুনানির জন্য ডাকা হয়। কলেজের সকল শিক্ষক ও প্রাক্তন শিক্ষার্থীবৃন্দ ডা. শারমিন আক্তার ভূইয়ার খারাপ আচরণের বিষয়ে অভিযোগ করেন। ৩৭ জন প্রাক্তন শিক্ষার্থী ও ২০ জন শিক্ষক লিখিতভাবে ডা. শারমিন আক্তার ভুঁইয়াকে অপসারণের আবেদন করেন। শুনানিকালে শ্রেণিকক্ষে শিক্ষর্থীদের সামনে ডা. শারমিন আক্তার ভুঁইয়া উচ্যবাচ্যে কথোপকথনের একটি ভিডিও ক্লিপস অভিযোগকারী শিক্ষকবৃন্দ তদন্তকারী কর্মকর্তাকে প্রদর্শন করেন সেখানে উপাধ্যক্ষ ডা: শারমিন আক্তার ভুঁইয়া নিজে অধ্যক্ষে হতে না পেরে উষ্মা প্রকাশ করেন। কলেজের সকল শিক্ষক-কর্মকর্তা ডা. শারমিন আক্তার ভুঁইয়ার আচরণে অতিষ্ঠ বলে জানান।

তদন্ত প্রতিবেদনে সিনিয়র সহকারী কমিশনার (শিক্ষা) মো. মাসুদ রানা উল্লেখ করেন উপাধ্যক্ষ ডা. শারমিন আক্তার ভুঁইয়ার অভিযোগ সমূহের জবাব অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) ডা. মো. আশরাফুর রহমান সন্তোষজনকভাবে প্রদান করেন। শুনানির সময়ও ডা. শারমিন তদন্তকারীর সামনে শিক্ষকদেরকে ধমকের স্বরে কথা বলে যা খুবই অগ্রহণযোগ্য আচরণ বলে পরিগনিত হয়।

পর্যালোচনায় দেখা যায়, দীর্ঘদিন থেকে ডা. শারমিন আক্তার ভুঁইয়ার অধ্যক্ষ হবার একটা অভিলাষ ছিলো। তিনি অধ্যক্ষ হতে না পেরে চরম হীনমন্যত্যায় ভুগতে থাকেন। এরকম একজন শিক্ষক প্রতিষ্ঠানের জন্য ক্ষতিকর বলে প্রতীয়মান হয় যার কারণে সকল শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী ও শিক্ষার্থীরা অতিষ্ঠ।

উপাধ্যক্ষ ডা. শারমিন আক্তার ভুঁইয়ার কারণে প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট হবার আশঙ্কা রয়েছে সেহেতু তাকে অপসারণ অথবা কড়া সতর্কবার্তা দেওয়া যেতে পারে।

এদিকে তদন্তকারী কর্মকর্তা বেশ কিছুদিন পূর্বে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করলেও সেই তদন্ত প্রতিবেদনের আলোকে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোন ধরনের পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। বরং ওই তদন্ত প্রতিবেদনে তদন্তকারী কর্মকর্তা অভিযোগের বিষয়ে পর্যালোচনা করে সুনির্দিষ্ট কোন মতামত প্রদান করেননি উল্লেখ করে গত ৯ জানুয়ারী পুনরায় তদন্ত করার নোটিশ জারি করেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মো. মাশফাকুর রহমান। যা নিয়ে কলেজের শিক্ষক শিক্ষার্থীদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। অভিযোগকারী শিক্ষক শিক্ষার্থীরা বলছেন তদন্ত কর্মকর্তার আহবানে যেখানে সকলেই উপস্থিত ছিলেন এবং তিনি সকলের মতামত নিয়ে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেছেন সেখানে পুনরায় তদন্ত করার আদেশের যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন সকলে।

এ বিষয়ে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মো. মাশফাকুর রহমান জানান, কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ও উপাধ্যক্ষের বিরুদ্ধে পারস্পরিক অভিযোগ ছিল। কিন্তু আগে যিনি তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেছিলেন তিনি একপক্ষের বিষয়ে মতামত দাখিল করেছিলেন। বর্তমানে তিনি ট্রেনিংজনিত কারণে ছুটিতে আছেন। যে কারণে জেলা প্রশাসকের নির্দেশে পুণরায় তদন্ত করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এখন ২ জন তদন্তকারী কর্মকর্তা তদন্ত করে রিপোর্ট দিবেন।

Islam's Group