News Narayanganj
Bongosoft Ltd.
ঢাকা বুধবার, ২২ জানুয়ারি, ২০২৫, ৯ মাঘ ১৪৩১

সিদ্ধিরগঞ্জে প্রকাশ্যে স্কুল শিক্ষক লাঞ্ছনার শিকার


দ্যা নিউজ নারায়ণগঞ্জ ডটকম | সিদ্ধিরগঞ্জ প্রতিনিধি প্রকাশিত: জানুয়ারি ২১, ২০২৫, ০৯:২৭ পিএম সিদ্ধিরগঞ্জে প্রকাশ্যে স্কুল শিক্ষক লাঞ্ছনার শিকার

সিদ্ধিরগঞ্জে প্রকাশ্যে লাঞ্ছনার শিকার শিক্ষকের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। মঙ্গলবার ২১ জানুয়ারি দুপুরে নাসিক সিদ্ধিরগঞ্জের ৬নং ওয়ার্ডের সফুরা খাতুন পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের এর শিক্ষক মিলনায়তনে এ লাঞ্ছনার শিকার হন সহকারী শিক্ষক আমিনুল হাসান (৩৮)। এ ঘটনায় ওই শিক্ষক বাদী হয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। 

শিক্ষকের দায়ের করা অভিযোগ থেকে জানা যায়, গত বছর জাতীয় পরিচয়পত্র এর তথ্য সংগ্রহ এ কাজ করার সময় সিদ্ধিরগঞ্জের গোদনাইল বার্মাস্ট্যান্ড এলাকার মো. মাসুমের স্ত্রীর জাতীয় পরিচয় পত্রে ভুল করাকে কেন্দ্র করে মাসুমের সাথে রিবোধ সৃষ্টি হয় শিক্ষক আমিনুল হাসান মো. মাসুম (৩৫) এর সাথে রিবোধ সৃষ্টি হয় শিক্ষক আমিনুল হাসান। এরই জের হিসেবে মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ১২টায় সফুরা খাতুন পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের এর শিক্ষক মিলনায়তনে বসে কাজ করছিলেন ওই শিক্ষক। এসময় মাসুম তার স্ত্রীর জাতীয় পরিচয়পত্র এর তথ্য আদান প্রদান করতে এসে শিক্ষক আমিনুল হাসানকে দেখে গালমন্ধ করেন। শিক্ষক এর প্রতিবাদ করলে মাসুম ঐ শিক্ষকের পাঞ্জাবির কলার চেপে তাকে মারধর ও লাঞ্ছিত করেন। এদিকে ঘটনার পর পরই  শিক্ষককে লাঞ্ছিত করার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যায়।

এ বিষয়ে শিক্ষক আমিনুল হাসান জানান, আমার সরকারি কাজে মাসুম বাঁধা প্রদান করেছে। সে আমাকে প্রকাশ্যে মারধর করেছে। আমার কাছে ভিডিও রয়েছে। আমি তার বিচার দাবি করছি।

এ বিষয়ে বিবাদী মাসুম বলেন, এলাকার মাইকে ভোটার তালিকা হালনাগাদ চলছে শুনে আমি সফুরা খাতুন বিদ্যালয়ে যাই। সেখানে গিয়ে প্রধান শিক্ষক রফিকুল সাহেব ও শিক্ষক ডালিয়া আমার স্ত্রীর ভোটার হওয়ার কাজ সম্পন্ন করে দেন। কাজ শেষ হওয়ার পর শিক্ষক আমিনুল আমার সামনে আসেন এবং অযথা বাকবিতন্ডায় জড়িয়ে পড়েন। গত বছর শিক্ষক আমিনুল নির্বাচন কমিশনের প্রদত্ত ডিজিটাল ফর্মে নিবন্ধন না করে  তার বাসায় থাকা ৩ বছর আগের পুরোনো নির্বাচন কমিশনের ফরমে আমার স্ত্রীর ভোটার ফরম নিবন্ধন করেন। তার এ ভুলের ফলে আমার স্ত্রী গত ১ বছরেও জাতীয় পরিচয়পত্রের কার্ড হাতে পাননি। যার ফলে আমাদের নানা ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়েছে। আজ শিক্ষক আমিনুল সামনে পড়লে প্রধান শিক্ষকের সামনে আমার গত এক বছরের আক্ষেপের কথা প্রকাশ করলে শিক্ষক আমিনুল আমার সাথে "তুই বেশি কথা কস! তোরে দেইখা নিমু, তোর পায়ের তলায় মাটি থাকবে না এসব কথা বলে" হুমকি প্রদান করেন। পরে একপর্যায়ে আমাদের দু'জনের মধ্যে বাক বিতন্ডা হয়।

সফুরা খাতুন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রফিকুল ইসলাম বলেন, স্কুলের সহকারী শিক্ষক আমিনুল সাহেব গত বছর মাসুমের স্ত্রীর ভোটার ফরমে ভুল করায় তাঁকে গত এক বছর নানা ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে। কোথাও গিয়ে তিনি প্রতিকার পাননি। আজ এ বিষয় নিয়ে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে তাঁদের দুজনের মধ্যে বাগবিতণ্ডা হয়। শিক্ষক আমিনুল হাসান কে এ বছর নির্বাচন কমিশন থেকে ভোটার তালিকা হালনাগাদের কোন দায়িত্বে রাখা হয়নি বলে জানান প্রধান শিক্ষক।

ঘটনাস্থলে যাওয়া সিদ্ধিরগঞ্জ থানার এসআই হাসান জানান, এ বিষয়ে আমরা একটি অভিযোগ পেয়ে স্কুলে গিয়েছি। স্কুলের কমিটি তারা এ বিষয়ে দুই পক্ষকে ডেকে সমঝোতা করবে বলে ঠিক করেছে।

এ বিষয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি মোহাম্মদ শাহিনূর আলম বলেন, ঘটনার পরই আমি স্কুলে পুলিশের টিম পাঠিয়েছি। গত বছর জাতীয় পরিচয়পত্র এর তথ্য সংগ্রহ এ কাজ করার সময় মো. মাসুমের স্ত্রীর জাতীয় পরিচয় পত্রে ভুল করাকে কেন্দ্র করে মাসুমের সাথে রিবোধ সৃষ্টি হয় শিক্ষক আমিনুল হাসান। মঙ্গলবার দুপুরে মাসুম তার স্ত্রীর জাতীয় পরিচয়পত্র এর তথ্য হালনাগাদ করতে স্কুলে এসে শিক্ষক আমিনুল হাসানকে দেখে বাজে মন্তব্য করেন। এ নিয়ে দুই জনের মধ্যে তর্কাতর্কী ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় অভিযোগ নেওয়া হয়েছে। তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Islam's Group