গণসংহতি আন্দোলন নারায়ণগঞ্জ জেলার সমন্বয়কারী তরিকুল সুজন বলেছেন, ডেঙ্গু প্রতিরোধে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন ব্যর্থ। ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে যেসব প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করার দরকার ছিল, সেখানে তারা দায়িত্বশীল আচরণ করেনি। তারা কেবল ৩৯ টি হট স্পট নির্ধারণ করে বসে আছে কিন্তু ডেঙ্গু নিরোধনে কোন কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করেনি। ফলে ডেঙ্গুর ভয়াবহতা ছড়িয়ে এখন ঘরে ঘরে ডেঙ্গু।
শুক্রবার নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সামনে বিকাল ৪টায় ডেঙ্গু প্রতিরোধে সিটি কর্পোরেশন ও সিভিল সার্জনের উদাসীনতায় বিক্ষোভ কর্মসূচিতে তিনি এই মন্তব্য করেন। বিক্ষোভ সমাবেশে নির্বাহী সমন্বয়কারী পপি রানী সরকার এর সঞ্চালনায় সভাপতিত্ব করেন সমন্বয়কারী নিয়ামুর রশীদ বিপ্লব।
সুজন বলেন, ‘ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে সিভিল সার্জন তার দায় এড়াতে পারেন না। নারায়ণগঞ্জে ২ টি সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা অনেক নি¤œমানের। এই ২টি হাসপাতালে ডেঙ্গুর চিকিৎসায় প্লাটিলেট সংগ্রহ ও ট্রান্সফিশনের জন্য এফেরেসিস মেশিন নাই। অতিদ্রুত ২ টি সরকারি হাসপাতালে এফেরেসিস মেশিন আনতে হবে এবং এই এফেরেসিস মেশিন ২৪ ঘণ্টা কার্যকর রাখতে হবে। ডেঙ্গুর যথাযথ চিকিৎসা না পেয়ে নারায়ণগঞ্জের বহু রোগীকে ঢাকায় ট্রান্সফার করা হয়। রোগীদের এই ভোগান্তির দায় কোনভাবেই সিভিল সার্জন এড়াতে পারেন না। সরকারি হাসপাতালগুলো যারা চিকিৎসা নিতে যান তারা তারা অনিয়ম, অব্যবস্থাপনা এবং ভোগান্তির শিকার হন। কেবল দায় সাড়া চিকিৎসা ব্যবস্থা নয়, সরকারি ২ টি হাসপাতালে আমরা কার্যকর চিকিৎসা ব্যবস্থা দেখতে চাই। আমরা বিশ্বাস করতে চাই, সিভিল সার্জন কার্যকর এবং দায়িত্বশীল আচরণ করবেন। আগামী ৭ দিনের মধ্যে যদি ডেঙ্গু পরিস্থিতির উন্নতি না হয় তবে আমরা সিভিল সার্জনের কার্যালয় ঘেরাও করবো।
সমাবেশে মহানগর কমিটির সমন্বয়কারী নিয়ামুর রশীদ বিপ্লব বলেন, জুন থেকে সেপ্টেম্বর মাস এডিস মশার প্রজনন কাল হিসেবে ধরা হয়। কিন্তু এডিস মশার প্রজনন রোধে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন পুরোপুরি ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। যার কারণে এখন ঘরে ঘরে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলছে। বিগত কয়েক বছর যাবত ডেঙ্গুতে আক্রান্তের গ্রাফ উর্ধ্বমুখী। আমরা বার বার সিটি কর্পোরেশন কর্তৃপক্ষকে ডেঙ্গু প্রতিরোধ বিষয়ে যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণে আহ্বান জানিয়েছি। কিন্তু নাসিক প্রশাসন ডেঙ্গু প্রতিরোধে পুরোপুরি ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছেন। বর্তমানে সভিল সার্জন অফিসের তথ্যমতে ২২০০ অধিক ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন। প্রতিদিন গড়ে ২৫-৩০জন রোগী সরকারি হাসপাতালগুলোতে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হচ্ছে। সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী ১০০ অধিক রোগী হাসপাতালে ভর্তি আছে। সরকারি হাসপাতালের বাইরে বেসরকারি হাসপাতাল ও বাসা বাড়িতে অসংখ্য ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী চিকিৎসা নিচ্ছেন। ডেঙ্গু এখন মহামারি আকার ধারণ করেছে। এখনই ডেঙ্গু প্রতিকারে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে নারায়ণগঞ্জের মানুষজন জীবন নিয়ে হুমকিতে পড়বে।
আরো বক্তব্য রাখেন সিদ্ধিরগঞ্জ থানা কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক জিয়াউর রহমান, প্রচার সম্পাদক মেহেদী হাসান উজ্জ¦ল, ২নং ওয়ার্ড কমিটির আহ্বায়ক মো. সোহাগ, ১২নং ওয়ার্ড কমিটির সদস্য সচিব মানিক হাওলাদার, ১৮ নং ওয়ার্ড কমিটির আহ্বায়ক শুক্কুর মাহমুদ জুয়েল ও ছাত্র ফেডারেশনের নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি ফারহানা মানিক মুনা প্রমুখ।
আপনার মতামত লিখুন :