নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলার লক্ষণখোলা এলাকায় স্কুল ও মাদ্রাসা সংলগ্ন ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় সিটি কর্পোরেশনের ময়লা আবর্জনা ডাম্পিং জোন নির্মাণ করার প্রতিবাদে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে স্থানীয় এলাকাবাসি ও স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা। নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন ঘনবসিতর্পূণ এলাকায় ডাম্পিং জোন নির্মাণ কাজ বন্ধ না করলে শিক্ষার্থী ও এলকাবাসীকে সঙ্গে নিয়ে বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে বলে হুশিয়ারি দিয়েছেন। তাদের দাবি এলাকায় ডাম্পিং জোন নির্মাণ হলে দুর্গন্ধ ছাড়াবে, পরিবেশ নষ্ট হবে এবং এলাকায় মানুষের ভোগান্তি বাড়বে।
শুক্রবার ৮ নভেম্বর জুমার নামাজের পর লক্ষণখোলা কড়ইতলা এলাকায় অবস্থিত মদিনাতুল উলুম মাহমুদিয়া মাদ্রাসার সামনে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। উত্তর লক্ষণখোলা কবরস্থান কমিটির সভাপতি হাবিবুর রহমান হবুর সভাপতিত্বে মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন রফিকুল ইসলাম, সালাউদ্দিন, খায়রুজ্জামান রাহিম, আবু রায়হান, মাজহারুল হকসহ বিভিন্ন মসজিদ মাদ্রাসা ও স্কুল কমিটির নেতৃবৃন্দ।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, ক্ষমতাচ্যুত ফ্যাসিষ্ট সরকারের আমলে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী লক্ষণখোলা বাসির মতামতকে উপেক্ষা করে ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় সিটি কর্পোরেশনের ডাম্পিং জোন করার জন্য নির্ধারণ করেন। শত বছরের পুরোনো কবরস্থান, মসজিদ, মাদ্রাসা, স্কুল কলেজের পাশে প্রায় ৭০ একর জমি অধিগ্রহণ করে এখানে ডাম্পিং জোন করার জন্য জায়গা নির্ধারণ করা হয়েছে। এরই মধ্যে জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে ডাম্পিং জোন করার জন্য জমি অধিগ্রহণ করা হচ্ছে। স্থানীয়দের দাবি জনবসতিপূর্ণ লক্ষণখোলা এলাকায় ডাম্পিং জোন নির্মাণ কর হলে এলাকার পরিবেশ দূষিত হয়ে পড়বে, দুর্গন্ধ ছাড়িয়ে পড়বে এলাকাজুড়ে। ডাম্পিং জোনের জন্য নির্ধারিত জায়গার পাশে বহুবছর আগে গড়ে উঠেছে মদিনাতুল উলুম মাহমুদিয়া মাদ্রাসা, বায়তুল রহমান জামে মসজিদ এবং উত্তর লক্ষণখোলা কবরস্থান। এর কিছুটা দূরেই আছে উত্তর লক্ষণখোলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ঢাকেশ্বরী বহুমুখী উচ্চবিদ্যালয় ও কলেজ।
এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কয়েকহাজার শিক্ষার্থী পড়াশোনা করে। কিন্তু এই জায়গা ডাস্পিং জোন হলে সিটি কর্পোরেশনের বিভিন্ন অঞ্চলের সকল ময়লা আবর্জনা, মেডিকেল বর্জ্য এখানে এনে ফেলা হবে। এতে এলাকার পরিবেশ দূষণের মাত্রা বাড়বে। দুর্গন্ধের কারণে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনায় বিঘ্ন ঘটবে। তাই তাদের দাবি ঘনবসতির্পূণ এলাকায় ডাম্পিং জোন নির্মাণ না করে সিটি কর্পোরেশন যেন অন্যকোনো উন্মুক্ত স্থানে এই ডাম্পিং জোন নির্মাণ করে। আর সিটি কর্পোরেশন যদি লক্ষণখোলা এলাকা থেকে ডাম্পিং জোন নির্মাণ কাজ সরিয়ে না নেয় তবে স্থানীয় এলাকাবাসী ও শিক্ষার্থীদের সাথে নিয়ে বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তোলার হুশিয়ারি দেন ।
উত্তর লক্ষণখোলা কবরস্থান কমিটির সভাপতি হাবিবুর রহমান জানান, লক্ষণখোলা এলাকায় কয়েকলাখ মানুষের বসবাস। ঘনবসতির্পূণ সিটি কর্পোরেশনের ২৫ নং ওয়ার্ডবাসীর একমাত্র কবরস্থান হচ্ছে উত্তর লক্ষনখোলা কবরস্থান। অথচ শত বছরের এই কবরস্থানের জায়গাসহ অধিগ্রহণ করে ডাম্পিং জোন করা হচ্ছে। এতে কবর দিতে আসা মানুষকে দুর্গন্ধের কারণে ভোগান্তি পোহাতে হবে। তাই বাধ্য হয়ে স্থানীয় এলাকাবাসী ও স্কুল কলেজ মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা মাববন্ধন ও সমাবেশ করেছে। তাদের দাবি সিটি কর্পোরেশন অন্য কোথায় ডাম্পিং জোন নির্মাণ করা হোক।
আপনার মতামত লিখুন :