নারায়ণগঞ্জ মহানগর মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক ও নাসিকের সদ্য সাবেক নারী কাউন্সিলর আয়েশা আক্তার দিনা বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার থাকা অবস্থায় তাদের সঙ্গে ফাইট করে আমি একাধিকবার কাউন্সিলর নির্বাচিত হই। আমি আমার কাজকর্মের মাধ্যমে বিএনপিকে সাধারণ মানুষের কাছে উপস্থাপন করেছিলাম। গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর আমাদের ব্যবসা করার সুযোগ হলো। এরপর আমি, স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা মমিনুর রহমান বাবু এবং যুবদল নেতা শাহেদ আহমেদকে নিয়ে ইপিজেডের দুটো কোম্পানির সঙ্গে ব্যবসার জন্য আমরা চুক্তিবদ্ধ হই। গত ২৯ সেপ্টেম্বর আমরা ফ্যাক্টরি থেকে যখন মালামাল বের করলাম। তখন কয়েকজন দুর্বৃত্ত আমাদের মালামাল চুরি করে নিয়ে যায়। আমি এর প্রতিবাদ জানালে আমার নামে মানহানি মামলা শুরু হয়। এখন আবার পাঁয়তারা চলছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে বিশৃঙ্খলা করায় আমার স্বামীসহ আমি এবং বিএনপির নেতাকর্মীদের আসামি করার জন্য। বিগত আওয়ামী লীগের সময়ে আমার অনেক নির্যাতনের শিকার হতে হয়। ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা আমার অফিস ভাঙ্গচুর করেছিল। বিপরীতে আমার বিরুদ্ধে মামলা করেছে। ওই মামলায় ৩ নম্বর আসামি করা হয় আমার স্বামী সায়েম প্রধানকে।
নিউজ নারায়ণগঞ্জকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, আমার স্বামী কোনো রাজনীতির সঙ্গে জড়িত না। সে একজন ব্যবসায়ী। কিন্তু আমার কারণে তাকেও অনেক নির্যাতনের শিকার হতে হয়। যদি কেউ প্রমাণ করে আমার স্বামী কোনো রাজনীতির সঙ্গে জড়িত তাহলে আমি নাকে খত দিয়ে দেশ ছেড়ে চলে যাবো। আমরা বিগত ১৭ বছরে হামলা, মামলার শিকার হয়েছি। এখনো কেনো হামলা, মামলার শিকার হতে হবে? কে সিদ্ধিরগঞ্জকে অশান্ত করতে চাচ্ছে? কে ইপিজেডে ব্যবসা করার পরিবেশ নষ্ট করছেন? অনেকেই মুখে জ্ঞানী টাইপের কথাবার্তা বলে থাকেন। কিন্তু প্রদীপের নিচেই অন্ধকার থাকে। এখন আর আগের দিন নেই। সবাই এখন সবকিছু বুঝে, জানে। আমি জ্ঞানের আলো ছড়িয়ে অনেক ছেলেকে মানুষ করছি কিন্তু আমার নিজের ঘরের সন্তানই গ্র্যাজুয়েশন কমপ্লিট না করে তাহলে এ শিক্ষার কোনো দাম থাকে না। নিজের সন্তানের অন্যায়কে প্রশ্রয় দিয়ে আমি যদি অন্যকে মামলা দিয়ে প্রতিহত করার চেষ্টা করি তাহলে এটা উচিত না। এ থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে। কে এই মানবরুপী দানব? যারা বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা দিতে চাচ্ছেন। যদি আমার বিরুদ্ধে, আমার স্বামীর বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া হয় তাহলে আমি স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার কাছে যাবো। প্রয়োজনে প্রধান উপদেষ্টার কাছে যাবো। আমি এর শেষ দেখেই ছাড়বো।
ইদানীং অনেকেই শামীম ওসমানের সঙ্গে থাকা তার কিছু ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে শেয়ার দিচ্ছেন বলে উল্লেখ করে আয়েশা আক্তার দিনা বলেন, এগুলো সব সামাজিক অনুষ্ঠানের ছবি। তখন মেয়র, চেয়ারম্যান, এমপি থেকে শুরু করে সবাই আওয়ামী লীগের ছিলেন। কিন্তু আমার এলাকার স্বার্থে, উন্নয়নের স্বার্থে তাদের কাছ থেকে আমার অনুদান নিয়েই তো কাজ করতে হবে। সেক্ষেত্রে ছবি থাকা তো দোষের কিছু না। আপনারা যে ছবির রাজনীতি করছেন এমন অসংখ্য ছবি আমার কাছেও আছে। কে কবে স্কুলে ১৫ আগস্ট পালন করেছেন, কার সন্তানেরা নৌকার ভোট চেয়েছেন, ২০১৮ সালে বিএনপির পক্ষে ভোট না চেয়ে কার সন্তানেরা আওয়ামী লীগের পক্ষে ভোট চেয়েছিল তা সবকিছুই আমার কাছে আছে। আমি কাঁদা ছোঁড়াছুড়ি করে দলের সুনাম নষ্ট করতে চাই না। কারণ আমরা এখন শান্তিতে বসবাস করতে চাই। বিগত ১৭ বছর আমরা পরাধীন হয়ে বেঁচে ছিলাম। এ বিষয়ে আমি প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন মহলের সহযোগিতা চাই। কোথাও যেনো বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে হয়রানীমূলক মামলা দেওয়া না হয়। আমরা সরকারকে ভ্যাট, ট্যাক্স দিয়ে হালালভাবে ব্যবসা করছি। আমরাতো চাঁদাবাজি করছি না। তাহলে আমাদের কোনো এতো বারবার বাধার শিকার হতে হচ্ছে।
আপনার মতামত লিখুন :