নারায়ণগঞ্জ শহরের ১০০ শয্যা ভিক্টোরিয়া জেনারেল হাসপাতালে ডাক্তার দেখাতে এসে প্রতিদিন শত শত রোগী ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। রোগীদের অভিযোগ, প্রথমে বহির্বিভাগের সামনে ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে টিকিট কাটতে হয়। এরপর সেই টিকিট নিয়ে যেতে হয় ডাক্তারদের চেম্বারের সামনে। তবে সেখানে গিয়েও দাঁড়িয়ে থাকতে হয় লম্বা লাইনে। আর এসব করতে করতে দুপুর ১টা অতিক্রম হলে রোগী দেখার জন্য ডাক্তারদের হাতে সময় থাকে না। তাই পরদিন আবার হাসপাতালে এসে ছুটতে হয় এদিক সেদিক।
হাসপাতালের বেশ কয়েকজন স্টাফ জানান, হঠাৎ করে হাসপাতালে রোগীর সংখ্যা বেড়ে গেছে। প্রতিদিন শত শত মহিলা রোগী ও শিশুদের হাসপাতালে ডাক্তার দেখানোর জন্য নিয়ে আসা হচ্ছে। বিশেষ করে চর্মরোগ, জ¦র, ঠান্ডা এবং ডেঙ্গুর উপসর্গ নিয়ে বেশি রোগী আসছে। কিন্তু রোগীর তুলনায় ডাক্তার কম। দুপুরের পরে ডাক্তার থাকে না। এই কারণে অনেক রোগী প্রতিদিন লম্বা সময় অপেক্ষা করেও ফেরত যাচ্ছে।
গত বুধবার নগরীর পাইকপাড়া থেকে ভিক্টোরিয়া হাসপাতালে স্কুল পড়ুয়া মেয়েকে চর্মরোগের ডাক্তার দেখাতে নিয়ে এসেছেন রাবেয়া বেগম। তিনি বলেন, আমরা তো পপুলার বা মর্ডানে যেতে পারি না টাকার জন্য। তাই সরকারি হাসপাতালে চলে আসি। তবে এখানে অনেক দুর্ভোগ। লাম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে টিকিট নিতে হয়েছে। এরপর ডাক্তার আপার চেম্বারের সামনেও লাইন। আমার এক ভাবী এসে ফেরত গেছে ডাক্তার পায়নি। কারণ দুপুরের পর তো তাদের নিজেদের চেম্বার থাকে। নতুন সরকারের উচিত সরকারি হাসপাতালগুলো আরও উন্নত করা।
ডাক্তার দেখাতে আসা কবির হোসেন নামে বন্দরের এক বাসিন্দা বলেন, নিচে অনেক বড় লম্বা লাইনে দাঁড়াইয়া টিকিট নিতে হইসে। সেখানে কোনো শৃঙ্খলা নাই। পরে আরএমও নিজে আইসা টিকিট কাউন্টারের সামনে সবকিছু ঠিকঠাক করছে। আমি দীর্ঘদিন ধরে একটা ওষুধের ফার্মেসি চালাই। আমার মতে এই হাসপাতালে হয় ডাক্তারদের সংখ্যা বাড়াতে হবে, নাইলে ডাক্তারদের অন্তত বিকেল পর্যন্ত হাসপাতালে রোগী দেখতে হবে। তাহলে অনেক সমস্যা সমাধান হবে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক নার্স বলেন, আমরা একদিন না আসলে অনেক কিছু হয়ে যায়। কিন্তু এমনও ডাক্তার আছে যারা নিয়মিত কাজে আসে না, তবে তাদের বেতন তো মাস শেষে ঠিকই অ্যাকাউন্টে চলে যায়। ৫ তারিখের পর ডাক্তারদের উপস্থিতি কিছুটা বাড়ছে। তবুও আমাদের খানপুর ও ভিক্টোরিয়া হাসপাতালে আরও ডাক্তার বাড়াতে হবে। আর সেটা সম্ভব না হলে যারা আছেন তাদের আরও বেশি সময় ডিউটি করতে হবে।
তবে এ বিষয়ে কথা বলতে হাসপাতালটির নতুন আরএমওকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
আপনার মতামত লিখুন :