আগস্ট-সেপ্টেম্বর-অক্টোবর, বছরের এই তিন মাস সারাদেশে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব বেশি থাকে। ঢাকার পাশের জেলা নারায়ণগঞ্জেও এর ব্যতিক্রম নেই। প্রতি বছর হাজার হাজার মানুষ এখানে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়। তবে সরকারি হাসপাতালে গিয়ে পায় না পর্যাপ্ত সেবা।
জানা গেছে, এ বছর আবারও নতুন করে এ জেলায় ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব শুরু হয়েছে। শহরের ১০০ শয্যা ভিক্টোরিয়া জেনারেল হাসপাতালে গত ত্রিশ দিনে (সেপ্টেম্বর মাস) ১০২ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রতিদিন গড়ে ৮-১০ জন রোগী ভর্তি হচ্ছেন। তবে ডেঙ্গু ভয়াবহ রূপ ধারণ করার আগে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ডেঙ্গু রোগীদের চিকিৎসাসেবা নিশ্চিতে বিশেষ কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না।
ভিক্টোরিয়া জেনারেল হাসপাতালের এক নার্স এ বিষয়ে বলেন, আমাদের এখানে পুরুষ ডেঙ্গু রোগীদের জন্য ৮টি বেড আছে এবং নারীদের জন্য ৮টি বেড আছে। কিন্তু প্রতিদিন যেই পরিমাণে রোগী আসছে এতে সবাইকে বিছানায় চিকিৎসা সেবা দেওয়া যাচ্ছে না। দেখা যাচ্ছে, হঠাৎ রোগী বেড়ে গেলে মাটিতে বিছানা করে সেখানে চিকিৎসা করাতে হচ্ছে। এই কারণে রোগীর স্বজনরা আমাদের সাথে খারাপ আচরণ করছে। পরিস্থিতি আরও খারাপ হওয়ার আগে ডেঙ্গু রোগীদের জন্য শয্যা সংখ্যা বাড়ানো উচিত কিন্তু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সেটা করছে না।
হাসপাতালের পুরুষ ডেঙ্গু ওয়ার্ডে আবুল হাসান নামে এক রোগীর বাবার সাথে কথা হলে তিনি বলেন, আমার ছেলেরে নিয়া যখন আসছি তখন আইসা বিছানা পাইছি। আমাদের পরে অনেকে আইসা বিছানা পায়নি। তাদের মাটিতে বিছানা কইরা দিসে নার্সরা। সেখানেই তাদের সেলাইন দেওয়া হইসে। মাটিতে যারা আছিল সেই ডেঙ্গু রোগীদের গরমে অনেক কষ্ট হইসে। এমনে তো একটা হাসপাতাল চলতে পারে না। হাসাপতালে কত জায়গা, ডেঙ্গু রোগী কেন মাটিতে থাকবো বলেন?
জানা গেছে, গত বছরও ডেঙ্গু রোগীদের চাপ সামলাতে গিয়ে হিমশীম খেতে হয়েছে ভিক্টোরিয়া হাসপাতালের ডাক্তার এবং নার্সদের। তাদের পাশাপাশি রোগীদেরও অনেক কষ্ট হয়েছিল ওই সময়। তখন হাসপাতালের তৃতীয় তলায় মাটিতে শুয়ে ডেঙ্গু রোগীদের চিকিৎসা নিতে হয়েছিল।
এ বিষয়ে কথা বলতে হাসপাতালের আরএমও ডাক্তার জহিরুল ইসলামকে বেশ কয়েকবার ফোন করা হলেও তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি। তবে নারায়ণগঞ্জে সিভিল সার্জন ডাক্তার মুশিউর রহমান বলেছেন, ডেঙ্গু রোগীদের চিকিৎসাসেবা শতভাগ নিশ্চিত করতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ, ডাক্তার ও নার্সরা কাজ করে যাচ্ছে।
আপনার মতামত লিখুন :