আগামী বছরের ফেব্রুয়ারীতে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে বাংলাদেশ হোসিয়ারী সমিতির নির্বাচন। হোসিয়ারী ব্যবসার আতুর ঘর নারায়ণগঞ্জ। সমিতির তালিকাভুক্ত এবং তালিকার বাহিরে সব মিলিয়ে কয়েক হাজার ছোটবড় প্রতিষ্ঠান গড়ে উছেঠে এখানে। তবে বিগত আওয়ামীলীগ সরকারের আমলে হোসিয়ারী সমিতির মতো এতো বড় একটি ব্যবসায়ীদের সংগঠন পরিচালিত হয়েছে বিনা ভোটে নির্বাচিত নেতা দিয়ে। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে এমনটা আর দেখতে চাননা ব্যবসায়ীরা। তারা সামনে একটি অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন দেখতে আগ্রহী। কেউ প্রভাব বিস্তারের মাধ্যমে যাতে সাজানো নির্বাচন করতে না পারে, তার জন্য চেম্বার অব কমার্সের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন তারা।
ব্যবসায়ীদের দাবি, বিএনপির নাম ভাঙিয়ে একটি মহল চেষ্টা করছে বিনা প্রতিযোগীতায় পছন্দের প্রার্থীকে হোসিয়ারী সমিতির সভাপতি বানাতে।
আনোয়ার হোসেন নামে নয়ামাটি এলাকার এক হোসিয়ারী ব্যবসায়ী বলেন, ওসমান পরিবার আওয়ামীলীগের আমলে তাদের চামচাদের হোসিয়ারীতে স্থান দিয়েছে। দেওভোগের কবির হোসেন আর সজল তাদের জন্য বারবার নেতা হইসে। তারা আমাদের জন্য কিছুই করেনি। সজল সারাদিন নারায়ণগঞ্জ ক্লাবে বসে কার্ড খেলত। আর হোসিয়ারী ব্যবসায়ীদের ধরে নিয়ে মোটা অংকের টাকায় ক্লাবের সদস্য বানাতো। তার মাধ্যমে হোসিয়ারীর কোনো উপকার হয়নি। আমরা এমন নেতা আর চাইনা। তবে দেখতে পাচ্ছি, অনেকে আগের মতো বিনা ভোটে নেতা হওয়ার চেষ্টা করছেন। আমরা চাই চেম্বার দায়িত্ব নিয়ে আমাদের এবারের নির্বাচন করে দিবেন।
নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক উকিলপাড়ার এক ব্যবসায়ী বলেন, হোসিয়ারী ব্যবসায়ীদের অনেক ধরনের সমস্যা। কিন্তু নির্বাচিত নেতা না থাকায় কোনো সমস্যার সমাধান হচ্ছেনা। কেউ যদি ভোটে পাশ করে তাহলে তার মধ্যে কাজ করার একটা তাগিদ থাকে। আমরা দেখছি আওয়ামীলীগের আমলে ঘোষণা দিয়ে নেতা হতো। সেই নেতাও তেমনই হয়েছে। কিন্তু এবার আমরা চাই সবার ভোটে একজন যোগ্য প্রার্র্থীকে পাশ করাতে। কেউ যাতে সেই নির্বাচনে বাধা না দেয় সেটা দেখার দায়িত্ব প্রশাসনের। ইতিমধ্যে অনেকে বলে বেড়াচ্ছে সে সভাপতি হয়ে গেছে। তার সাথে কেউ নাকি ভয়ে প্যানেলই দিবেনা।
এর আগে গত মাসে শহরের একটি কমিউনিটি সেন্টারে হোসিয়ারী এসোসিয়েশনের বার্ষিক সভায় সমিতির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সাঈদ আহম্মেদ স্বপন আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে নির্বাচনের ঘোষনা দেন। সেখানে উপস্থিত ছিলেন সাবেক সভাপতি ও এক সময়ের বিএনপি নেতা বদিউজ্জামান বদু।
সভায় তিনি বলেন, আমি এবার যদি নির্বাচিত হই তাহলে মিশনপাড়ার বিল্ডিং (হোসিয়ারী সমিতি ভবন) ভাইঙ্গা বড় বিল্ডিং করমু। নিচতলা পার্কিং আর দোতলায় আপনাগো জন্য ক্লাব কইরা দিমু। সেখানে সিনিয়ার-জুনিয়ার আলাদা আলাদা বসবো। কমিটি সেন্টারও কইরা দিমু। আপনার ছেলে মেয়ের বিয়ে হইলে সেটা ফ্রি পাইবেন। আমাদের হোসিয়ারী সমিতির একটা জায়গা আছে যেটা নিয়া গেছে। আমি মামলা কইরা হলেও ওই জায়গা উদ্ধার করমু। আপনাদের জন্য কিছু করতেই এবার আমি নির্বাচনে যাবো। তবে আপনাদের কাছে দয়া করে একটা রিকুয়েষ্ট চেহারা দেইখা ভোট দেয়ার চেষ্টা কইরেন না। বদু ভাই আপনেরে দিসি ১২ টা, আর হেগো দিসি ৪ টা। এই যিনিসটা কইরেন না। আমারে যদি চান তাহলে আমার পুরা প্যানেলরে ভোট দিতে হইব। আমারে অর্ধেক দিবেন আর আরেক জনরে চেহেরা দেইখা দিবেন তাহলে তো আমার কাজের বেঘাত ঘটবো।
আপনার মতামত লিখুন :