সারাদেশের মতোন নারায়ণগঞ্জেও হুর হুর করে বেড়েছিল ডিম ও মুরগী দাম। সেই সঙ্গে বাজারে ডিমের সংকট লক্ষ্য করা গিয়েছিল। তবে এক মাসের ব্যবধানে ডিম ও মুরগীর বাজারের পরিস্থিতি ফের স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে। দাম কমায় সাধারণ মানুষদের মধ্যেও কাজ করছে স্বস্থি। তবে বাজারে আগের মতোন ক্রেতাদের চাপ নেই। ব্যবসায়ীদের দাবি, পূর্বে প্রতিদিন যে পরিমান বেচাকেনা হতো এখন তার অর্ধেকও নেই। অন্যদিকে, ক্রেতাদের ভাষ্য, ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেটের কারণে ডিম-মুরগী থেকে শুরু করে নিত্য প্রয়োজনীয় বিভিন্ন জিনিসপত্রের দাম বৃদ্ধি পায়। নিয়মিত বাজার মনিটরিং করলে এই সিন্ডিকেট তৈরি হতে পারবে না। বর্তমানে প্রশাসন কঠোর মনোভাব দেখানোর কারণে ডিম-মুরগীর দাম অনেকটাই কমতে শুরু করেছে।
রোববার (৩ নভেম্বর) বিকেলে নারায়ণগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী দীগুবাবুর বাজারে সরেজমিনে গিয়ে এসব তথ্য পাওয়া যায়।
মুরগীর বাজারে ঘুরে দেখা যায়, নানা জাতের মুরগীর দাম কমেছে। বর্তমানে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগী ১৯৫ টাকা, কক মুরগী ৩১০ টাকা, লেয়ার লাল মুরগী ৩৪০ টাকা, লেয়ার সাদা মুরগী ২৫০ টাকা, প্যারেন্ট খাসি মুরগী ৩৬০ টাকা, প্যারেন্ট খাসি মোরগ ৩৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। গত মাসে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগী ২২০-২৩০ টাকা, কক মুরগী ৩২০-৩৪০ টাকা, লেয়ার লাল মুরগী ৩৭০-৩৮০ টাকা, প্যারেন্ট খাসি মুরগী ৩৯০ টাকা, প্যারেন্ট খাসি মোরগ ৪০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
পাশাপাশি ডিমের বাজারে গিয়ে দেখা যায়, বর্তমানে প্রতি হালি ডিম ৪৮ টাকা, হাঁসের ডিম ৭০ টাকা, দেশি মুরগীর ডিম ৮০ টাকা, সোনালী ডিম ৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। গত মাসে প্রতি হালি ডিম ৬০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছিল।
আশরাফুল ইসলাম। পেশায় একজন চাকুরীজীবী। তার সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, এতোদিন মুরগীর অত্যাধিক দামের কারণে মুরগী কেনা অসহনীয় হয়ে উঠেছিল। কিন্তু আজ বাজারে এসে দাম কিছুটা সহনীয় মনে হলো। তাই বিভিন্ন জাতের কয়েকটি মুরগী কিনে নিলাম।
ইসরাফিল হোসেন নামের আরেক ক্রেতা বলেন, মধ্যবিত্ত পরিবারের জন্য ডিম ছাড়া চলা অসম্ভব। কিন্তু এই ডিমের দাম কিছুদিন আগে এতোই বেড়েছিল যে ডিমের নাম শুনলেই ভয় কাজ করতো। আবার বেশি দামেও ডিম পাওয়া যেতো না। এখন দাম কিছুটা কমলেও দাম আরও কমা উচিত বলে আমি মনে করি। সেজন্য সরকারের প্রয়োজনীয় প্রদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন।
মেসার্স মো. সাব্বির আলী ট্রেডার্স এর মালিক আশরাফ আলী বলেন, এখনো আমাদের বেশি দামে ডিম কিনতে হচ্ছে। তাই আমাদেরও ক্রেতাদের কাছে বেশি দামে ডিম বিক্রি করতে হচ্ছে। ভোক্তা অধিকার থেকে দাম নির্ধারণ করে দিলেও আমাদের জন্য তা কষ্টকর হয়ে দাঁড়িয়েছে। পাশাপাশি ক্রেতার চাপ দিনের পর দিন কমতে শুরু করেছে। আবার এতোদিন যে ব্যক্তি ১ ডজন ডিম একসঙ্গে কিনতো ওই ব্যক্তি এখন ১ হালি ডিম কিনে থাকেন। এভাবে আমাদের ব্যবসা টিকিয়ে রাখা অনেকটা কষ্টকর হয়ে দাঁড়াচ্ছে।
আলমগীর হোসেন নামের আরেক মুরগী দোকানি বলেন, বন্যার কারণে মুরগীর দাম কিছুটা বেড়ে গিয়েছিল। তবে এখন দাম কমতে শুরু করেছে। আমরা পাইকারদের কাছ থেকে কম দামে মুরগী ক্রয় করতে পারলে তা কম দামে বিক্রি করতে তো আমাদের কোনো সমস্যা নেই। বর্তমানে বেচাবিক্রিও কিছুটা বেড়েছে। আশা করছি, ধীরে ধীরে মুরগীর দাম আরও কমে যাবে।
আপনার মতামত লিখুন :