News Narayanganj
Bongosoft Ltd.
ঢাকা বৃহস্পতিবার, ১৪ নভেম্বর, ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১

ওসমানদের আশীর্বাদ টাকার কুমির সুজিত


দ্যা নিউজ নারায়ণগঞ্জ ডটকম | স্টাফ রিপোর্টার : প্রকাশিত: অক্টোবর ২৮, ২০২৪, ১১:০৫ পিএম ওসমানদের আশীর্বাদ টাকার কুমির সুজিত

বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের ১৭ বছরে কোটি কোটি টাকার মালিক হয়েছেন এক সময় কাস্টমসে চাকরি করা সুজিত সাহা। নারায়ণগঞ্জে তিনি গডফাদার পরিবারের সাবেক এমপি শামীম ওসমান ও সেলিম ওসমানের লোক হিসেবেই পরিচিত। সাধারণ জনগণের মাঝে সুজিত সরকার খুব বেশি পরিচিত না হলেও নারায়ণগঞ্জের এলিট শ্রেনী ও গডফাদারদের দোসরদের কাছে বেশ পরিচিত ও আলোচিত নাম।

কাস্টমসে চাকরি করা সুজিত সাহা শামীম ওসমানের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ ভাজন হওয়াতে সেখানে তার প্রভাব ছিল ব্যাপক। শুধু সুজিত সাহা একাই নন তার পরিবারের মোট ৪জন সদস্য কর্মরত ছিল কাস্টমসে। নিজের দুই জামাতার পরে ভাগিনাকে প্রভাব খাটিয়ে কাস্টমসে চাকরি পাইয়ে দিয়েছেন সুজিত সরকার।

জানা গেছে, নারায়ণগঞ্জে দীর্ঘদিন ধরে আলোচনায় থাকা চাষাঢ়া বালুর মাঠ ট্যাক্সি ট্যান্ড এলাকার জমিটি অত্যন্ত সুকৌশলে খালেদ হায়দার খান কাজলের সাথে রাজউক থেকে স্বল্প মূল্যে ক্রয় করে পরবর্তীতে তা পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টারের কাছে বিক্রি করে দিয়ে মাত্র কয়েক মাসের মধ্যেই ১১কোটির অধিক টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।

এমপি সেলিম ওসমানের স্নেহভাজন হওয়ায় নারায়ণগঞ্জে হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে অনেক যোগ্য নেতা থাকার পরেও সুজন সাহাকে দীর্ঘ প্রায় ১০ বছর যাবত লাঙ্গলবন্দ স্নান উদযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক বানিয়ে রেখেছেন। অথচ এই কমিটির কোন কার্যক্রমেই বিগত দিন গুলোতে উপস্থিত থাকতে দেখা যায়নি সুজিত সাহাকে। কমিটির সভাপতি সরোজ সাহা একজন বড় ব্যবসায়ী হয়েও লাঙ্গলবন্দ স্নান উৎসবের পূর্বে নিজে সরেজমিনে উপস্থিত থেকে আয়োজনের তদারকি করে থাকেন। কিন্তু সুজিত সাহা লাঙ্গলবন্দে কোন ভূমিকা না রেখেও বছরের পর বছর ধরে স্নান উদযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক বনে আছেন। কোন নেতা ভয়ে মুখ খুলতে সাহস পায়নি শুধুমাত্র সুজিত সাহা এমপি সেলিম ওসমানের আস্থা ভাজন হওয়ার কারনে।

সুজিত সাহা এমপি সেলিম ওসমানের কতটা আস্থাভাজন ছিলেন সেটি মাত্র কয়েক মাস আগের ঘটনা পর্যালোচনা করলেই স্পষ্ট হয়ে উঠে।

খবর পাওয়া গেছে, গত ৫ আগস্ট ফ্যাসিস্ট সরকার পতনের মাত্র মাস দেড়েক আগেই এমপি সেলিম ওসমানের মালিকানাধীন চাষাড়া রামবাবুর পুকুরপাড় এলাকায় দুটি বাড়ি বিক্রি করে দিয়েছেন। সেই বাড়ি দুটি সুজিত সাহা ১০ কোটি টাকায় কিনে নিয়েছিলেন। পরবর্তীতে ওই বাড়িতে ফকির গ্রুপের স্বত্তাধিকারী মনিরুজ্জামানের নামে সাইনবোর্ড লক্ষ্য করা গেছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সুজিত সাহা সাবেক এমপি সেলিম ওসমানের কাছ থেকে নগদ ১০ কোটি টাকা দিয়ে বাড়ি দুটি কেনার পর অধিক মূল্যে ফকির গ্রুপের কাছে বিক্রি করে দিয়ে রাতারাতি আরো কয়েক কোটি টাকা কামিয়ে নিয়েছেন। এছাড়াও আমলাপাড়া এলাকায় তার নিজস্ব বাড়ি ও একাধিক গাড়ি রয়েছে খবর পাওয়া গেছে।

কাস্টমসে চাকরি করা একজন ব্যক্তির এমন শত শত কোটির মালিক বনে যাওয়ায় নারায়ণগঞ্জে আলোচনা হতে শুরু করেছে। সুজিত সাহা বর্তমানে কাস্টমস থেকে চাকুরিচ্যুত রয়েছে। গুঞ্জন রয়েছে, কোন এক অনিয়মের অভিযোগে তাকে কয়েক বছর আগে চাকরি থেকে বাধ্যতামূলক অবসর দেওয়া হয়েছে।

সদর ও সোনারগাঁ থানায় দুটি মামলা দায়েরের বিষয়ে সুজিত সাহা বলেন, আমি এক একজন সাবেক কাস্টমস কর্মকর্তা। কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত নই আমি। তবুও কি কারণে আমার বিরুদ্ধে দুটি মামলা দায়ের হলো তা আমার জানা নেই। মামলার যারা বাদী তারা আমাকে চিনেন কিনা কিংবা কারা আমার বিরুদ্ধে মামলা করালো তা ভগবানই ভালো বলতে পারবেন। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় আমি কারো সঙ্গে কোনো অন্যায় করি, কাউকে একটা থাপ্পরও দেই নি। তারপরও আমার বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।

খালেদ হায়দার খান কাজলের সঙ্গে মিলে রাজউক থেকে স্বল্পমূল্যে জমি কিনে তা অধিক দামে পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টারের কাছে বিক্রি করে দেওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, আমার জন্ম এই নারায়ণগঞ্জে। কাজল ভাই একজন ব্যবসায়ী নেতা। সেই সুবাদে তার সঙ্গে আমার পরিচয় আছে। কিন্তু আমি তো সাবেক কাস্টমস কর্মকর্তা ছিলাম। আমার সঙ্গে তার জমির ব্যবসা থাকবে কিভাবে? আর আমি কোনোভাবেই এই কাজের সঙ্গে জড়িত নই। এগুলো সম্পূর্ণ মিথ্যা কথা। তদন্ত করলে এর সঠিক তথ্য বেরিয়ে আসবে।

Islams Group
Islam's Group