News Narayanganj
Bongosoft Ltd.
ঢাকা বৃহস্পতিবার, ১৪ নভেম্বর, ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১
চেম্বারের সভাপতি মাসুদুজ্জামান ইস্যুতে মোহাম্মদ আলী

তাঁকে তো আমি সভাপতি বানালাম


দ্যা নিউজ নারায়ণগঞ্জ ডটকম | বিশেষ প্রতিনিধি : প্রকাশিত: অক্টোবর ২৬, ২০২৪, ১১:৩০ পিএম তাঁকে তো আমি সভাপতি বানালাম

নারায়ণগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ নিয়ে এবার মুখ খুললেন সাবেক সভাপতি ও ব্যবসায়ী মোহাম্মদ আলী। তিনি দাবী করেছেন, তাঁর কারণেই মাসুদুজ্জামান বর্তমানে সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। যদিও এর আগে মাসুদুজ্জামান অভিযোগ করেছিলেন মোহাম্মদ আলী চেম্বার নিয়ে নোংরামি করছেন।

চেম্বারের বাৎসরিক সাধারণ সভা হয়েছে ২৬ অক্টোবর। এ সভা নিয়ে কয়েকদিন ধরেই চলছিল উত্তেজনা। সবশেষ ২৫ অক্টোবর একটি গ্রুপ সংবাদ সম্মেলন করেছিল। কিন্তু এজিএমে এর কোন প্রভাব পড়েনি।

মো. মাসুদুজ্জামান মাসুদের এমন বক্তব্যের প্রেক্ষিতে সময়ের নারায়ণগঞ্জ হতে যোগাযোগ করা হয় মোহাম্মদ আলীর সঙ্গে। তিনি জানান, এ সময়ে তিনি দেশের বাইরে আছেন।

‘আমাদের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলনের পেছনে পরিষ্কারভাবে তার ইন্ধন রয়েছে’ মাসুদুজ্জামানের এ মন্তব্যের প্রেক্ষিতে  মোহাম্মদ আলী বলেন, এটা যদি কেউ বলে থাকে তাহলে ভুল বলেছে। মাসুদ হচ্ছেন আমার নিজের লোক। আমার ভাতিজা। আমি চাই সে সভাপতি থাকুক। তাকে তো সভাপতি আমিই বানাইলাম।

মোহাম্মদ আলীকে ইঙ্গি করে মাসুদ মন্তব্য করেছিলেন ‘উনি কি কাউকে সভাপতি বানানোর কোনো ক্ষমতা রাখেন নাকি’ প্রসঙ্গে বলেন, সে যদি এটা বলেও থাকে তাহলে সে ভুল বলেছে। আমি আমার কাজ করে দিয়েছি। আমি সভাপতি হতে চাইলেই তো আমি সভাপতি হতে পারবো না। মানুষ চাইলে আমি সভাপতি হতে পারবো। তা না হলে আমি যাবো কেনো ওইখানে?

এর আগে গত ২৫ অক্টোবর সংবাদ সম্মেলন করে একটি অংশ অভিযোগ করেন, নারায়ণগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ সভাপতির পদ থেকে খালেদ হায়দার খান কাজল পদত্যাগ করার পরে অতি চাতুর্যতার সাথে ফ্যাসিবাদের দোসর মোরশেদ সারওয়ার সোহেল গং মাসুদুজ্জামানকে প্রেসিডেন্ট হিসেবে কো-অপ্ট করেন। সেইসাথে ত্বকী হত্যাকাণ্ডের আত্মস্বীকৃত খুনি পরিবারের ব্যক্তিকে ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে রাখা হয়েছে। এছাড়াও চাঁদাবাজির টাকা ফেরত দেয়া নিয়েও স্ট্যান্টবাজি করা হয়েছে। মাসুদুজ্জামানের নেতৃত্বে ফ্যাসিবাদের দোসরদের চেম্বার অফ কমার্সে পুনর্বাসনের চেষ্টা চলছে। গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ও নতুন সরকার দেশের দায়িত্ব নেওয়ার পর নারায়ণগঞ্জ চেম্বার থেকে ৩ লাখ টাকা চাঁদা নেওয়ার অভিযোগ করেন সভাপতি মাসুদুজ্জামান। এছাড়া গার্মেন্ট মালিকদের সংগঠন বিকেএমএইএ থেকে ৫ লাখ টাকা চাঁদা নেয়ার কথাও জানান। দায়িত্ব নেওয়ার পরেই মাসুদুজ্জামান বলেছিল চাঁদাবাজি বন্ধ করতে হবে এবং চাঁদার টাকা ফেরত দিতে হবে। তা না হলে শহীদ মিনারে ওই চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে লাল কার্ড প্রদর্শন করা হবে। এমন হুংকারে ১ অক্টোবর নারায়ণগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স এবং বিকেএমএইএ থেকে নেওয়া চাঁদার টাকা ফেরত আনা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিকেএমইএ’র সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম।

সেদিন প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে মো. মাসুদুজ্জামান মাসুদ বলেন, উনি (মোহাম্মদ আলী) কি কাউকে সভাপতি বানানোর কোনো ক্ষমতা রাখেন নাকি? সে মূলত চেম্বারের কেউ না। শুধুমাত্র তিনি একজন মেম্বার। এছাড়া তো উনি কিছু না। উনি কিভাবে সভাপতি বানায় ফেলেন? এটা আগে সম্ভব ছিল। এখন আর কিভাবে ঘটবে। মোহাম্মদ আলী সাহেবের সঙ্গে ব্যক্তিগতভাবে আমার সম্পর্ক ভালো। কিন্তু উনি যা এখন করাচ্ছেন তা নোংরামি ছাড়া কিছুই না। আজকের সংবাদ সম্মেলনের পেছনে পরিষ্কারভাবে তার ইন্ধন রয়েছে। সংবাদ সম্মেলনের আগে মোহাম্মদ আলীর পঞ্চবটির অফিসে মিটিং হয়েছে। এতোদিন এ নিয়ে কেউ কথা বলেন নি। কারণ মোহাম্মদ আলী সাহেবকে দাওয়াত দেই নি তাই। সংবাদ সম্মেলনে কি কথা বলতে হবে তাও মোহাম্মদ আলী সাহেব বানিয়ে দিয়েছেন। উনি সুযোগ চাচ্ছেন চেম্বারে প্রবেশ করার। কিন্তু যারা গত ১৫বছর বিভিন্নভাবে সুবিধা নিয়েছিল তারাই যদি পুনরায় চেম্বার অব কমার্সের দায়িত্বে আসতে চায় এ নিয়ে আমি উৎসাহবোধ করি না।

তিনি বলেন, আমি জোর করে সভাপতির পদ দখল করি নাই। ওই কঠিন মুহূর্তে আমাকে চেম্বার অব কমার্সের ব্যবসায়ীরা সংগঠনের হাল ধরতে বলেন। পরে আমি সভাপতি পদ গ্রহণ করে চেম্বার অব কমার্স পরিচালনা করছি। আর আমিতো পূর্বের ন্যায় সারাজীবনের জন্য সভাপতি হয়ে যাই নি। আমাদের পরিকল্পনা রয়েছে আগামী বছরের ফেব্রুয়ারির দিকে নির্বাচনের আয়োজন করা হয়। যে নির্বাচনে চেম্বার অব কমার্সের যে কেউ অংশগ্রহণ করতে পারবেন। সুষ্ঠু ও সুন্দর পরিবেশে নির্বাচন আয়োজনের লক্ষ্যেই শনিবার এজিএমের আয়োজন করা হয়েছে। এদিন নির্বাচনের সম্ভাব্য তারিখসহ বিভিন্ন বিষয় নির্ধারণ করা হবে। একটি মহলের ইন্ধনের কয়েকজন ব্যবসায়ী গুজব ছড়াচ্ছেন, এজিএমের মাধ্যমেই নাকি আমরা নির্বাচন ছাড়াই কমিটি গঠন করে ফেলছি। যা সম্পূর্ণ মিথ্যা কথা। আর রেজিস্ট্রেড প্রত্যেক ব্যবসায়ীকে এজিএমে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। এখানে কাউকে মাইনাস করার সুযোগ নেই। বিগত আওয়ামী লীগের পুরোটা সময় আমি নির্যাতিত ছিলাম। তখন কমিটি নিয়ে কেউ কোনো কথা বলার সাহস পেতো না। এখন যারা বলছে তাদের আমি সাধুবাদ জানাই। নির্বাচনে ১০টা প্যানেল হোক আমরা তাতে রাজি আছি। সবাই যে চেম্বার অব কমার্স নিয়ে কথা বলছেন তা আমি ইতিবাচকভাবে দেখি। আমি চাই আমাদের কোনো ভুল হলে তারা গঠনমূলক সমালোচনা করুক।

Islams Group
Islam's Group